গোকুলম কেরলকে ২-১ গোলে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ইস্টবেঙ্গল। আজ, শুক্রবার সন্ধ্যায় যুবভারতীতে কোয়ার্টার ফাইনালের খেলায় নেমেছিল লাল-হলুদ শিবির। জয়ের সুবাদে আগামী মঙ্গলবার যুবভারতীতেই প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল। তবে, আজ জিতলেও ইস্টবেঙ্গলের খেলা নিয়ে কিছুটা চিন্তা রয়েই গেল। শুক্রবার সকাল থেকেই বৃষ্টি হয়ে চলেছে। ম্যাচের সময়েও তার বদল নেই। টানা বৃষ্টিতে মাঠের অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। ফলে লাল-হলুদ ফুটবলারেরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেননি। পাসিং ফুটবল দেখা যায়নি সেভাবে। গোকুলমের কাছে বেশ কিছু সুযোগ এসেছিল। তারা কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতে পারত। স্বাভাবিকভাবেই এই জয় নিঃসন্দেহে আনন্দ দেবে লাল-হলুদ সমর্থকদের। গত কয়েক মরসুমে কোনও ট্রফিই জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। এ বার মরসুমের প্রথম ট্রফি থেকে মাত্র দুই ধাপ দূরে লাল-হলুদ শিবির।
এদিন ম্যাচের ৩০ সেকেন্ডের মাথায় একটি কর্নার পায় ইস্টবেঙ্গল। কর্নার থেকে ছোট পাসে বল আসে নাওরেম মহেশের কাছে। তিনি বক্সের মধ্যেই বল ভাসান। সেখান থেকে হেডে গোল করেন জর্ডান এলসে। শুরুতেই গোল পেয়ে যাওয়ায় যুবভারতীর লাল-হলুদ সমর্থকেরা আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠেন। প্রথম গোল পেয়ে যাওয়ার আরও আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু কিছুতেই ভাল সুযোগ আসছিল না। বৃষ্টিতে মাঠের অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। ফলে ফুটবলরদের নিজেদের মধ্যে পাস খেলতে সমস্যা হচ্ছিল। খেলার গতিটাও কিছুটা কমে যায়। গোলের মুখ খুলতে পারছিল না গোকুলমও। ৩২ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল ইস্টবেঙ্গলের কাছে। কিন্তু ক্রেসপোর শট বারে লাগে। একটি কর্নারের পর বল এসেছিল ক্রেসপোর কাছে। বক্সের বাইরে থেকে তাঁর জোরালো শট বারে না লাগলে তখনই ২-০ এগিয়ে যেত ইস্টবেঙ্গল। তাঁর ছ’মিনিট পরে সিভেরিয়োর হেড বারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৪১ মিনিটে গোকুলমের অ্যালেক্সের শট দারুণ দক্ষতায় আটকে দেন ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন গিল।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ফের এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। ডিফেন্ডারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে আচমকাই এগিয়ে এসেছিলেন গোকুলমের গোলকিপার বাসিত। মহেশ তাঁর মাথার উপর দিয়ে বল গোলে ঢোকাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হন তিনি। ইস্টবেঙ্গলের খেলার মধ্যে কিছুটা ক্লান্তি করা যাচ্ছিল। যার সুযোগ নিতে দেরি করেনি গোকুলম। বাঁ দিক থেকে ক্রস ভাসিয়েছিলেন অভিজিৎ। অরক্ষিত অবস্থায় থাকা বৌবা অনায়াসে হেডে গোল করেন। গোল খেয়েই মরিয়া হয়ে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত নামিয়ে দেন দলের সেরা অস্ত্র ক্লেটন সিলভাকে। কিন্তু মাঠের অবস্থার কারণে ক্লেটনও নিজের খেলাটা খেলতে পারছিলেন না। রক্ষণ সামলাতে জোসে পারদোকেও নামানো হয়। এমন সময় ইস্টবেঙ্গলের রক্ষাকর্তা হয়ে ওঠেন নিশু। বাঁ দিকে বল পেয়েছিলেন মহেশ। তিনি বক্সে না ভাসিয়ে ব্যাক পাস করেন নিশুকে। নিশু গোল লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন, যা বৌবার গায়ে লেগে দিক বদলে জড়িয়ে যায় গোকুলমের জালে। বাকি সময়ে রক্ষণ অভেদ্য রেখেছিল লাল-হলুদ শিবির। ফলত গোকুলমের গোল শোধের আশা অধরাই থেকে যায়।