এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুলে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই হিংসা ও দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ঝাড়গ্রামে আদিবাসী মঞ্চ থেকে গর্জে উঠলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমরা কাজ করব। আর উনি সবকিছু আটকে দেবেন। এটা বরদাস্ত করব না।” এরপরই সরাসরি রাজ্যপালকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “আপনার সৎসাহস থাকলে বিধানসভায়. শিক্ষা সংক্রান্ত যে বিলটা তৈরি হয়েছে, সেটা পাশ করিয়ে দিন। তা না করে আপনি ছাত্রছাত্রীদের রাজভবনে ডেকে বলবেন, দাঙ্গা কাকে বলে, দুর্নীতি কাকে বলে। এটা রাজ্যপালের কাজ?” কিছুক্ষণ থেমে এর জবাবও দিয়েছেন নিজেই। “ওনার কাজ সংবিধানে লেখা রয়েছে। তার বাইরে বেরিয়ে গায়ের জোরে যা খুশি করা যাবে না। তেমন মনে হলে বিজেপির হয়ে ইলেকশনে দাঁড়ান। জিতে এসে দেখান। তবে ১০০ বছরেও হবে না। কারণ, ততদিনে বিজেপি দলটাই উঠে যাবে”, বক্তব্য মমতার।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য় নিয়োগকে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়িয়েছিল রাজ্য-রাজ্যপাল। অভিযোগ, রাজ্যের সঙ্গে কথা না বলেই ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য় নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গর্ভনর মহাশয়. কালো চশমা পড়ে জ্ঞান দিয়ে বেড়াচ্ছেন। আপনি কালো চশমা পড়ুন, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনকে ভিসি করেছেন, যিনি কেরালায় আইপিএস ছিলেন। যার সঙ্গে শিক্ষার কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের আপত্তিটা এখানেই।” রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য়ের পদ খালি হলেই রাজ্যপাল রাজনীতির চেষ্টা করছেন, এমন অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “ঝাড়গ্রামে ভিসি ও রেজিস্টারের পদ শূন্য রয়েছে। আমি আজই এই দুটো পদে নাম ঠিক করে দিয়ে যাব।” রাজ্যে সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের রাজ্য বনাম রাজ্যপালের দ্বৈরথ দেখেছিল বাংলা। হিংসা বন্ধের উদ্দেশ্যে রাজভবনে ‘পিস রুম’ চালু করেছিলেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবার ফের বাংলার হিংসা ও দুর্নীতি ইস্যুতে সরব হয়েছিলেন সিভি আনন্দ বোস। এবার ঝাড়গ্রামের আদিবাসী মঞ্চ থেকে তারই সপাট জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা, এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।