২০০২ সালে সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাত জুড়ে। আর সেই সময়েই গণধর্ষণ করা হয় ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে। গত বছর ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসে সেই গণধর্ষণ কাণ্ডের ১১ জন দোষীকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাতের বিজেপি সরকার। আর তারপরই সমালোচনায় মুখর হয় নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি। তবে চাপের মুখেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল প্রশাসন। এই সিদ্ধান্ত সঠিক না বেঠিক, নারীর অধিকার রক্ষার পক্ষে তা কতটা বিপজ্জনক, কী দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হল– এসব বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা এখনও চলছে। এবারই এই বিষয়ে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, গণ বিক্ষোভে বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হবে না।
বানোর ধর্ষকদের মুক্তির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছে মামলা। মঙ্গলবার ছিল সেই মামলারই শুনানি। এদিন বিচারপতি বিভি নাগারত্ন ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, বিক্ষোভ-প্রতিবাদের প্রভাব আইনি সিদ্ধান্তে কোনও প্রভাব ফেলবে না। আইন আইনের পথেই চলবে। বানোর আইনজীবী শোভা গুপ্তা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন, দোষীদের মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে জনবিক্ষোভের মতো একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরকেও বিচার করা উচিত। তিনি দাবি করেন, বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়েছে।
তাঁর এই বক্তব্যের জবাবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ‘গণ বিক্ষোভ আমাদের বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে না। আমরা কেবল আইনি প্রক্রিয়াকেই দেখব, ওটা (বিক্ষোভ-প্রতিবাদ) দেখে এগোব না। ধরা যাক, কোনও বিক্ষোভ হল না। সেক্ষেত্রে আমরা কি নির্দেশ বহাল রেখে দেব? গণ বিক্ষোভ মানেই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল?’