আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, কারচুপি করে ধনী হয়েছে আদানিরা। শেয়ার বাজারে তাঁদের যে অবস্থান, তার অনেকটাই কৃত্রিম। যার পরেই শেয়ার বাজারে ধস নামতে শুরু করেছিল আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব বলে ধরে নিয়েছিলেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সব হিসেব-নিকেশকে মিথ্যে প্রমাণ করে একের পর এক মাইলফলক গড়ে চলেছে শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থা। এবার তাতে নবতম সংযোজন সিমেন্ট সংস্থা সঙ্ঘী ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের অধিগ্রহণ। তবে এর পেছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর সরকারের হাত রয়েছে বলেই অভিযোগ বিরোধীদের।
চলতি মাসেই গুজরাতের সিমেন্ট সংস্থা সঙ্ঘী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড অধিগ্রহণ করেছে আদানি গোষ্ঠীর মালিকানাধীন অম্বুজা সিমেন্ট। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা দিয়ে সঙ্ঘী সিমেন্ট কিনে নিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু পর পর যে ঘটনাক্রম সামনে এসেছে এবং তার পর যে ভাবে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, রীতিমতো জোর-জবরদস্তি এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। সঙ্ঘী সিমেন্ট কিনতে আগ্রহী ছিল শ্রী সিমেন্ট নামের অন্য একটি সংস্থা। বিষয়টি চাউর হতেই দফায় দফায় শ্রী সিমেন্টে দফায় দফায় হানা দায়ে আয়কর দফতর। তাতে বাধ্য হয়ে পিছিয়ে যায় শ্রী সিমেন্ট। তার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সঙ্ঘী সিমেন্টের মালিকানা ওঠে আদানি গোষ্ঠীর হাতে।
এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে বন্দর এবং সাম্প্রতিক কালে সিমেন্ট, আদানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি এবং আয়কর দফতরকে লেলিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে প্রতিযোগী সংস্থাগুলি দর হাঁকা থেকে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয় এবং শেষমেশ আদানি গোষ্ঠীর হাতেই সব সম্পত্তির মালিকানা ওঠে’। কী ভাবে শ্রী সিমেন্ট দর হাঁকা থেকে পিছিয়ে গেল এবং শেষমেশ সঙ্ঘী সিমেন্টের মালিকানা আদানি গোষ্ঠীর হাতে উঠল, তার ঘটনাক্রম তুলে ধরে তিনি লেখেন, ‘হম আদানি কে হ্যায় কৌন সিরিজে প্রধানমন্ত্রীর জন্য ১০০টি প্রশ্ন তুলে ধরেছে কংগ্রেস। একেবারে দিনক্ষণ ধরে, কী ভাবে আদানির প্রতিদ্বন্দ্বি সংস্থাগুলির দফতরে মোদির পাঠানো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি হানা দিল এবং শেষ মেশ কী ভাবে আদানির হাতে সংস্থার হাতে মালিকানা উঠল, তারও বিশদ তথ্য তুলে ধরা হল’।