কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে মণিপুরে কিছুতেই নিভছে না হিংসার আগুন। এই ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত দেড়শো জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। বিপুল পরিমাণ সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। গণধর্ষণ, নগ্ন করে ঘোরানো, জীবন্ত পুড়িয়ে মারার মত ঘটনাও ঘটেছে। তবে এতকিছুর পরও মণিপুর-সংক্রান্ত আলোচনা নেই সংসদের বাদল অধিবেশনে! আর তাই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল বিরোধীরা। তারপরই সরকারের পক্ষ থেকে বিরোধীদের জানানো হয়েছিল আলোচনা হবে ১৮ ঘণ্টা। এবার লোকসভার সচিবালয় জানিয়ে দিল ৮-১০ আগস্ট এই আলোচনা হবে ১২ ঘণ্টা। অন্যদিকে, মণিপুর ইস্যুটি বাদল অধিবেশনের শেষদিন (১১ আগস্ট) রাজ্যসভায় আলোচনা করতে চায় সরকার। যা মানতে নারাজ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। তাই অধিবেশনের শেষ সপ্তাহে মোদী সরকারকে সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে লোকসভা-রাজ্যসভা উত্তাল করবে বিরোধীরা।
আজ লোকসভায় ‘দ্য ডিজিটাল পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন বিল ২০২৩’ সহ চারটি বিল পাশ করাতে চায় সরকার। এর মধ্যে আছে বিতর্কিত ডেটা প্রোটেকশন বিলটি যা সংসদীয় কমিটিতে না পাঠিয়ে জোর করে পাশ করানোর চেষ্টা রুখতে বিরোধীরা প্রবল বাধা দেবে বলেই ঠিক করেছে। তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন যে তিনি এতদিন রাজনীতি করছেন, এমন প্রধানমন্ত্রী আগে দেখেননি। যাকে সংসদে সভার মধ্যে হাজির করাতে গেলে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে হচ্ছে! এর চেয়ে লজ্জা বোধহয় গণতান্ত্রিক ভারতে আর কিছু নেই, বলেন তিনি। আবার, তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের তোপ দেগে বলেন যে আসলে ইন্ডিয়া জোটকে ভয় পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই ইন্ডিয়া জোটের ভয়ে পালাচ্ছেন। তাঁর কথায়, তবে যতই এড়ান ভোটে মানুষকে কী করে এড়াবেন। সব জবাব পাবেন।
এদিকে বাদল অধিবেশনে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ পশ্চিমবঙ্গের বকেয়ায় বিষয়টি তোলা সম্ভব হয়নি তৃণমূলের। তবে এরই মধ্যে অবশ্য দলের দুই সাংসদ সৌগত রায় এবং দীপক অধিকারী (দেব) মহাত্মা গান্ধী নারেগা প্রকল্পে বাংলায় বকেয়ার ইস্যুটিতে সরকারের কাছ থেকে লিখিত জবাব আদায় করেছেন। তৃণমূল এমপি সাজদা আহমেদ দেশ-বিদেশে যাওয়া উলুবেড়িয়ার ব্যাডমিন্টনের শাটল ককের ওপর থেকে জিএসটি কমানোর দাবি জানাতে পেরেছেন। মৌখিক প্রশ্নে কিংবা কোনও আলোচনার মধ্যে এখনও বাংলার বকেয়ার ইস্যু, বাংলার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বর মতো বিষয়ও ওঠেনি। সূত্রের খবর, আগামী মঙ্গলবার থেকে লোকসভায় যে অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনা শুরু হবে, সেখানেই বাংলার বিষয়গুলি উত্থাপন করা হবে।