এখনও অশান্ত দিল্লি সংলগ্ন গুরুগ্রাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে হরিয়ানার বিজেপি সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে হিংসাদীর্ণ নুহ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে তাউরু এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতেই বুলডোজার গুঁড়িয়ে দিল আড়াইশোরও বেশি ঝুপড়ি। সেগুলি ছিল ভিনরাজ্য থেকে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের।
হরিয়ানা প্রশাসনের দাবি, সোমবার যারা অশান্তি বাধিয়েছিল, তাদেরই বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঘর ভেঙেছে পরিযায়ীদেরই, যাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ বাংলার মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের নির্দেশেই ওই বুলডোজার চালানো হয় বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনা ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলে টুইট করে এই ক্ষোভের কথা জানান। তিনি লেখেন, ‘গুরুগ্রাম এবং নুহতে যে ঘটনা ঘটেছে তার খবর পেয়ে এবং ছবি দেখে আমি মর্মাহত। প্রধানত ভিন রাজ্য থেকে আসা মুসলিম শ্রমিকদের ঝুপড়িই ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এবং এদের মধ্যে একটা বড় অংশের মানুষ বাংলার। এমন ঘটনা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পরিযায়ী ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষগুলির নিরাপত্তার দাবি করছি। এবং পুলিশকে অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
গত সোমবার থেকেই ধর্মীয় মিছিলে অশান্তি ঘিরে উত্তপ্ত হরিয়ানা। যে অশান্তি ছড়িয়েছে গুরুগ্রামেও। এরই মাঝে বৃহস্পতিবার রাতে যোগী আদিত্যনাথের দেখানো পথেই হেঁটে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করল আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য।
সোমবারের উত্তেজনার কেন্দ্রস্থল নুহ থেকে প্রায় কুড়ি কিলোমিটার দূরের তাউরু এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে চালানো হয় বুলডোজার। সূত্রের খবর, ঝুপড়িগুলি ভেঙে দেওয়ার এই নির্দেশ এসেছিল মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকেই। দু’দিন আগেই রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয় বলে বিতর্ক তৈরি করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী। সেই দিনই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনে যোগী আদিত্যনাথের দেখানো বুলডোজারের পথেই হাঁটতে পারেন তিনিও। এর পরেই ঝুপড়ি ভাঙার নির্দেশ দিয়ে বিতর্কে বাড়তি ইন্ধন জোগালেন খট্টর। প্রশাসন সূত্রে খবর, ঝুপড়িগুলি আসলে বাংলাদেশিদের আখড়া। আসাম হয়ে ভারতে প্রবেশ করে এখানে ঘাঁটি গেড়েছে তারা।