ভারতে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি। কিন্তু তাঁরা কে কী কাজ করেন, তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থান কেমন, তাঁরা কোন কোন সামাজিক সুরক্ষা পান, দৈনিক ভিত্তিতে তাঁদের মজুরি কত, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী— তা নিয়ে কোনও তথ্যই নেই কেন্দ্র সরকারের কাছে। তাই সারা দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নিয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ ও তা এক ছাতার তলায় আনার লক্ষ্যে ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের অধীনে ই-শ্রম পোর্টাল চালু করে মোদী সরকার। সে সময়ই দেশের প্রতিটি রাজ্যকে টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে যাতে সেই সব রাজ্যের অসংগঠিত ক্ষেত্রে জড়িত শ্রমিকদের নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় আনার পাশাপাশি তাঁদের সম্পর্কিত তথ্য কেন্দ্র সরকারের কাছে থাকে। এখন দেখা যাচ্ছে সেই টার্গেট পূরণের পথে দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি এগিয়ে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা। যেখানে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে দেশের একের পর এক বিজেপি শাসিত ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলি।
কেন্দ্র থেকে বাংলাকে ২ কোটি ৭৯ লক্ষ অসংগঠিত শ্রমিকদের নাম নথুভুক্তকরণের টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। এখন কেন্দ্রের তথ্যে দেখা যাচ্ছে সেই নাম নথিভুক্তির টার্গেট পূরণে বাংলা মাত্র ২১ লক্ষে পিছিয়ে আছে। অর্থাৎ ইতিমধ্যেই বাংলায় ২ কোটি ৫৮ লক্ষ অসংগঠিত শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে। বাংলার থেকে ঢের পিছিয়ে বিজেপি শাসিত একের পর এক রাজ্য। বাংলার পরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র। তাঁদের টার্গেট ছিল ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ। অথচ গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত ওই রাজ্যে নাম নথিভুক্তির সংখ্যা মোটে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ৯২ হাজার ১১১ জন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে বাংলা থেকে নামনথিভুক্তকরণ সব থেকে বেশি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা। গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে ২৩ লক্ষ ১৬ হাজার ৩০১ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২২ লক্ষ ২২ হাজার ৫৫২ জন এবং উত্তর ২৪ পরগনায় ২০ লক্ষ ২ হাজার ৫১৭ জন অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে।