বৃহস্পতিবার থেকে আরম্ভ হয়েছে চলতি অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ টেস্ট। এদিন শুরুটা ভাল করলেও দিনের শেষে খানিকটা চাপে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ২ ঘণ্টায় ওভার প্রতি ৪.২৮ রান তোলেন অজিরা। তবে নিয়মিতও উইকেটও হারাতে হয় তাদের। প্রথম দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ৮ উইকেটে ২৯৯। উল্লেখ্য, বুধবার টেস্ট ক্রিকেটে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করলেন ইংরেজ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। বুধবার টস জিতে প্রথম ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। ইংল্যান্ডকে শুরুতেই সাফল্য এনে দেন ব্রড। অস্ট্রেলিয়ার ফর্মে থাকা ওপেনার উসমান খোয়াজাকে (৩) আউট করেন তিনি। আগের টেস্টগুলিতে রান না পাওয়া ওয়ার্নার অবশ্য ম্যাঞ্চেস্টারে শুরু করেছিলেন আগ্রাসী মেজাজে। ম্যাচের প্রথম বলেই ব্রডকে চার মেরে শুরু করেন তিনি। যদিও এই ম্যাচেও বড় রান পেলেন না। ৩২ রান করে তিনি আউট হলেন ক্রিস ওকসের বলে। তিন নম্বরে নামা মার্নাস লাবুশেন অর্ধশতরান পেলেন। দিনের প্রথম জল পানের বিরতির পর খেলা শুরু করতে মিনিট ৫ দেরি হল তাঁর জন্যই। উইকেটের সোজাসুজি গ্যালারির একটি চেয়ারে সূর্যের আলো পড়ায় তাঁর বল দেখতে অসুবিধা হচ্ছিল। আম্পায়ারেরা সেই চেয়ার ঢাকার ব্যবস্থা করার পর আবার খেলা শুরু হয়। খোয়াজা দ্রুত আউট হওয়ায় দলের ইনিংস তৈরি করার চেষ্টা করেন লাবুশেন। ভালই খেলছিলেন। কিন্তু অর্ধশতরান পূর্ণ করার পর তাঁর মনঃসংযোগে বাধার সৃষ্টি হয়। ৫১ রান করে মইন আলির বলে এলবিডব্লিউ হন লাবুশেন।
প্রসঙ্গত, এদিন অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারের কেউই বড় রান করতে পারলেন না। স্মিথ, ট্যাভিস হেড ভাল শুরু করেও আউট হয়ে গেলেন। স্মিথের ব্যাট থেকে এল ৪১ রান। তিনি আউট হলেন মার্ক উডের বলে। হেড (৪৮) হাতছাড়া করলেন অর্ধশতরান। হেডকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করলেন ব্রড। মিচেল মার্শও আউট হলেন ৫১ রানে করে। তাঁকে আউট করেন ওকস। চতুর্থ টেস্টে দলে ফেরা ক্যামেরুন গ্রিন সাফল্য পেলেন না। মাত্র ১৬ রান করে আউট হলেন ওকসের বলেই। ওকসের শিকার তালিকায় আছেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারেও (২০)। দিনের শেষে ২২ গজে অপরাজিত রয়েছেন স্টার্ক (২৩) এবং কামিন্স (১)। ষষ্ঠ এবং সপ্তম উইকেট একই ওভারে হারিয়ে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সে সময় কামিন্সের দলের রান ছিল ৭ উইকেটে ২৫৫। ওকসের অনবদ্য বোলিং ইংল্যান্ডকে সে সময় বসিয়ে দেয় চালকের আসনে। এর পর কিছুটা ধীরে খেলতে শুরু করেন কামিন্সেরা। উইকেট বাঁচিয়ে খেলার উপর জোর দেন তাঁরা। ইংল্যান্ডের বোলারেরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেন। ভাল ফিল্ডিংও করলেন স্টোকসেরা। অন্য দিকে ধারাবাহিক ব্যবধানে উইকেট হারাল অজিরা।
বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার ওকস। ৫২ রানে ৪ উইকেট নিলেন তিনি। ৬৮ রান দিয়ে ২ উইকেট ব্রডের। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন উড এবং মইন। এ দিন বিশ্বের দ্বিতীয় পেসার হিসাবে টেস্ট ক্রিকেটে ৬০০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন ব্রড। এর আগে এই কৃতিত্ব শুধু ছিল ইংল্যান্ডেরই আর এক জোরে বোলার জেমস অ্যান্ডারসনের। অ্যাশেজ সিরিজের চতুর্থ টেস্ট শুরুর আগে ব্রডের ঝুলিতে ছিল ৫৯৮টি উইকেট। বুধবার ম্যাঞ্চেস্টারে অস্ট্রেলিয়ার উসমান খোয়াজা এবং হেডকে আউট করে ৬০০ উইকেট পূর্ণ করলেন তিনি। অ্যান্ডারসনের টেস্ট উইকেট সংখ্যা ৬৮৮। পেসার হিসাবে বিশ্বের দ্বিতীয় হলেও সব মিলিয়ে পঞ্চম বোলার হিসাবে টেস্ট ক্রিকেটে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করলেন ব্রড। টেস্টে সব থেকে বেশি উইকেটের মালিক শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন স্পিনার মুথাইয়া মুরলীধরন। তাঁর ঝুলিতে হয়েছে ৮০০টি টেস্ট উইকেট। দ্বিতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন। প্রয়াত ক্রিকেটার টেস্টে ৭০৮টি উইকেট পেয়েছিলেন। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অ্যান্ডারসন। চতুর্থ স্থানে অনিল কুম্বলে। ৬১৯টি টেস্ট উইকেট পেয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক।