২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন দোরগোড়ায়। আর তারই মধ্যে বাংলার পঞ্চায়েতের ফলাফল। শাসকদলের তুমুল জয় নিঃসন্দেহে উদ্বেগ বাড়াবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের। বিশেষ করে বিজেপিকে চিন্তায় ফেলে দিল উত্তরবঙ্গ। উত্তর থেকে সাতটি আসন গত লোকসভা ভোটে পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। একুশের বিধানসভা ভোটে খানিকটা ধাক্কা খেলেও গড় পুরোপুরি ভেঙে পড়েনি। কিন্তু পঞ্চায়েতের ফল প্রকাশ্যে আসতেই দেখা গেল ভরাডুবি দশা। অন্যদিকে এই জয় নিঃসন্দেহে অক্সিজেন যোগাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসকে।
বাংলায় বিজেপির বড় ভরসার জায়গা ছিল উত্তরবঙ্গ। সেখান থেকে একাধিক জেলাপরিষদ আসবে বলে দাবি করেছিলেন বঙ্গ বিজেপির নেতারাও। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা গেল অন্য ছবি। ৯০ শতাংশের বেশি আসনে জয় লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে হতাশ হতে হয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপিকে।
আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাথমিক ফল দেখে জেলা পরিষদ দখলের আশাও মঙ্গলবার রাতে ছেড়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। অথচ উনিশের লোকসভা নির্বাচনে এই তিনটি লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে ছিল। এবার পঞ্চায়েত ভোটে উত্তরবঙ্গের চা বাগান এলাকায় আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে শাসক শিবির দায়িত্ব দিয়েছিল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই দুই এলাকায় চমকপ্রদ ফল করেছে তৃণমূল।
পঞ্চায়েত ভোটে উত্তরবঙ্গের ফল ভাল না হওয়াটা চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির কাছে অশনি সংকেত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের হুঙ্কার, ২০২৪ এ জমি পুনরুদ্ধার করবে বিজেপি। প্রসঙ্গত, গত ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে তুলনা করলে আসন বাড়লেও আদতে উত্তরে জমি হারিয়েছে বিজেপি। যদিও কয়েকটি বুথে সন্ত্রাস হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিল বঙ্গ বিজেপির নেতারা। মোট ৬১ হাজার ৬৩৬টি বুথের মধ্যে গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটেছিল খুবই কম সংখ্যক বুথে। কিন্তু অধিকাংশ যেসব বুথেই ভাল ভোট হয়েছে সেখানেও ফল খারাপ হয়েছে বিজেপির। আর তা নিয়েই সম্ভবত এবার দলের হাই কম্যান্ডের প্রশ্নের মুখে পড়তে চলেছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।