গত ৮ জুন ঘোষিত হয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ। ৮ জুলাই ছিল ভোটগ্রহণের দিন। মাঝের প্রায় ১ মাস জুড়ে চলেছিল প্রচারের পালা। সেখানে তৃণমূলের সম্পর্কে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে, দুইজনের পরিবারের সম্পর্কে, রাজ্য সরকারের সম্পর্কে যা কিছু তাই বলে গিয়েছে বিরোধীরা। মিথ্যা, কুৎসার সীমাহীন অপপ্রচার চলেছে। কিন্তু তার রেজাল্ট কী হল? ভোটের দিনেই রাজ্যের সর্বত্র চোখে পড়েছে বুথে বুথে মহিলাদের ভিড়। পরিসংখ্যানও বলছে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুষদের অপেক্ষা মহিলাদের ভোট দেওয়ার হার ছিল বেশি। কেন? ওয়াকিবহাল থেকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একসুরে একটাই অভিমত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা আর্থসামাজিক প্রকল্পের জন্য। মমতা মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দিয়েছেন। দিচ্ছেন। প্রতি মাসে মাসে। তিনি ঘুষ দিয়ে ভোট কিনছেন না। তিনি মানুষকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করছেন। তাঁদের সম্মান দিচ্ছেন। তাই মানুষও আজ দুই হাত ভরে তাঁকে ভোট দিয়ে উপহার দিচ্ছেন।
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, মমতার জমানায় সব থেকে বেশি লাভবান হয়েছেন মহিলারা। স্বাস্থ্যসাথী বাড়ির প্রবীণ মহিলাদের দিয়েছে সম্মান। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিয়েছে নিয়ম করে রোজগার। কন্যশ্রী বাংলার মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়িয়েছে, বাল্য বিবাহ ঠেকিয়েছে। রূপশ্রী বাংলার গরীব ঘরের মেয়েদের বিয়ের খরচ যোগাচ্ছে। রাজ্যের হাজার হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী মহিলাদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে। জয় বাংলা, জয় জোহর বাংলার উপেক্ষিত প্রবীণ মানুষদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
বিজেপি কী দিয়েছে? ১০০দিনের কাজের টাকা বন্ধ। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার টাকা বন্ধ। প্রধামন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার টাকা বন্ধ। মিড ডে মিলের টাকা বন্ধ। বাংলার হকের টাকা পাঠানো বন্ধ। মানুষের প্রাপ্য টাকা পাঠানো বন্ধ। মানুষ তাই নিজেরাই বেছে নিয়েছিলেন ভোটের বহু আগেই যে তাঁরা ঠিক কাকে ভোট দেবেন। দুপুর ১টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, বাংলার ৩,৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১,২১৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত চলে গিয়েছে বা যেতে বসেছে তৃণমূলের দখলে। বিজেপি পেয়েছে বা পেতে চলেছে ২৮৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত। কংগ্রেস পাচ্ছে ১৩৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত। বামেদের ঝুলিতে যাচ্ছে ১১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত। আইএসএফ পেয়েছে ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত। অনান্যদের ঝুলিতে গিয়েছে ৪৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত। সব মিলিয়ে একদিকে তৃণমূলের পকেটে ১,২১৮ ও বিরোধীদের সন্মিলিত পকেটে ৫৯২টি। ফারাক ও ব্যবধান স্পষ্ট।