এবার মোদী সরকারকেই পাল্টা দোষারোপে বিঁধলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। উল্লেখ্য, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের ১০ হাজারের বেশি বুথে বাহিনী দিতেই পারেনি কেন্দ্র। এজন্য এবার তাদেরকেই দুষলেন রাজীব সিনহা। পাশাপাশি, স্পর্শকাতর বুথের তালিকা সংক্রান্ত বিএসএফের অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। আজ, মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোটের গণনার দিন নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজীব। তিনি জানান, ভোটে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে অশান্তি হয়েছে। কিন্তু প্রতি ক্ষেত্রেই কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ এবং কিছু রাজনৈতিক দলের ধারণা ছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে ভোটের সময় অশান্তি কম হবে। বাহিনীর জন্য বাড়তি ভয় কাজ করবে। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি। প্রথমে আদালত বলেছিল প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে হবে। পরে সেই নির্দেশে সংশোধন করে বলা হয়, যে ক’টি বুথে সম্ভব বাহিনী দিতে হবে। আমার মনে হয় না ১০ হাজারের বেশি বুথে ওরা বাহিনী দিতে পেরেছে।’’ শনিবার ভোট মেটার পরেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনেছিল বিএসএফ। তাদের বক্তব্য ছিল, সংবেদনশীল বুথের তালিকা কমিশনের কাছে চেয়েও পাওয়া যায়নি। প্রথা মেনে বাহিনী মোতায়েনের আগে যে তথ্য দেওয়ার কথা ছিল কমিশনের, তা দেওয়া হয়নি শেষ পর্যন্ত।
এদিন বিএসএফের এহেন অভিযোগ নস্যাৎ করে রাজীব বলেন, ‘‘বিএসএফের পরিকল্পনায় স্পর্শকাতর বুথের কোনও গল্প ছিল না। জেলাভিত্তিক স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা আমরা জানিয়ে দিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম শুধু স্পর্শকাতর কেন, ডিএম এবং এসপির সঙ্গে কথা বলে প্রতি বুথেই বাহিনী দেওয়া হবে। বিএসএফ যদি স্পর্শকাতর বুথের তালিকা না-ই পায়, তা হলে ওরা বুথগুলিতে বাহিনী দিল কী করে?’’ রাজীব জানান, কমিশন হিসাবে গোটা রাজ্যে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে তাঁরা দায়বদ্ধ। সেই অনুযায়ী সমস্ত বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ভোটের দিন যা যা অশান্তির খবর কমিশনের কাছে এসেছিল, তার ভিত্তিতে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। নানা অভিযোগ, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ইত্যাদি খতিয়ে দেখে ভোটের পর ৬৯৬টি বুথে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুনর্নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে। মঙ্গলবার মোট ৩৩৯টি কেন্দ্রে গণনা চলছে। হাতেগোনা কয়েকটি বুথে গণনা শুরু হতে দেরি হয়েছে। গণনাকেন্দ্রে এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে রাজ্য পুলিশের শতাধিক কর্মী। শান্তিপূর্ণ ভাবেই চলছে ভোটগণনা।