চলছে ক্রমাগত বর্ষণ। এহেন দুর্যোগের ফলে বিপর্যস্ত সারা উত্তর ভারত। একাধিক রাজ্যে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি, পাশাপাশি নামছে ধস। বহু বাড়ি-ঘর ভেসে গিয়েছে। প্রায় সব নদীতেই জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। শহর, গ্রাম কার্যত জলমগ্ন। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার অবধি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম তরফে জানা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (১০ই জুলাই পর্যন্ত) উত্তরপ্রদেশে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন বজ্রপাতে। ১২ জন ডুবে ও ভারী বর্ষণে ৫ জন মারা গিয়েছে। রায়বেরিলিতে ৫ ও বেরিলি জেলায় চারজনের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। মুজফফরনগর, কনৌজ, বদায়ুন, গাজিপুর, জ্বালাউন ও কানপুরে বজ্রপাতে মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রবল বর্ষণে হিমাচল প্রদেশ বিপর্যস্ত। সে’রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিধস ও বন্যার খবর পাওয়া গিয়েছে। বৃষ্টির কারণে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনটি জাতীয় সড়কসহ ৭৩৬টি রাস্তায় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হিমাচল প্রদেশের সাত জেলায় লাল সর্তকতা ও অন্য তিন জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
পাশাপাশি, অতি বৃষ্টিতে যমুনার জলস্তর বিপদসীমা পেরিয়েছে। ফলত জলমগ্ন রাজধানী। প্রবল বৃষ্টিতে স্কুল, কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিচু এলাকা থেকে মানুষজনকে অনত্র সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে দিল্লি সরকার। ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা গত চল্লিশ বছরে হয়নি। অন্যদিকে ক্রমশ খারাপ হচ্ছে হিমাচল প্রদেশের পরিস্থিতি। মুষলধারে বৃষ্টিতে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে প্রকৃতি। বিপাশা নদী বিপদসীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। হিমাচলের আবহাওয়া দফতরের তরফে বলা হয়েছে, ১৪ই জুলাই পর্যন্ত পুরো রাজ্যে বৃষ্টি চলতে পারে। হিমাচলের লাহৌল-স্পিতিতে আকস্মিক বন্যা, তুষারধসেরও সতর্কতা জারি হয়েছে। উনা, বিলাসপুর, হামিরপুর, চাম্বা, কাংড়া, কুল্লু এবং মান্ডি জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। অন্যদিকে, সিমলা, সোলান, সিরমাউর এবং লাহৌল-স্পিতিতে হলুদ-কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হিমাচলজুড়ে প্রায় ১৩৩টি রাস্তা বন্ধ। বিমান ও ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়। রিভার র্যাফটিং এবং প্যারাগ্লাইডিংয়ের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিমলা জোনে ৮৮টি, মান্ডিতে ২৫টি, হামিরপুরে ১০টি এবং কাংড়া জোনে ১০টি রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া কিছু রাস্তা তলিয়ে গিয়েছে নদীগর্ভে। ভেঙে গিয়েছে একাধিক সেতু ও মন্দির।