দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচন। শনিবারই রাজ্যজুড়ে ভোট। শেষ লগ্নের প্রচারে ব্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলি। এই আবহে ফের অস্বস্তি বাড়ল বঙ্গ বিজেপির। “নিজের স্ত্রী-সন্তানকেই যে দেখে না, সে সমাজের আর কী উন্নয়ন করবে?” ঠিক এই অভিযোগে বিজেপি প্রার্থীর দেওয়াল লিখনে জুতোপেটা ও দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়ার চেষ্টা করলেন তাঁর স্ত্রী। পুলিশের কাছে বধূ নির্যাতনের লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। ভোটপ্রচারের শেষ দিনে এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন বজবজ ২ নম্বর ব্লকের দক্ষিণ বাওয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের মলঙ্গদ্বার গ্রামের বাঁকুলি পাড়ার বাসিন্দারা। অভিযোগ, ২০২ নম্বর বুথের গ্রামসভার বিজেপি প্রার্থী অভয় ভোঁড়ের পারিবারিক বিবাদ তুঙ্গে ওঠে তাঁর স্ত্রী অনসূয়ার। মাসখানেক হল তিনি কন্যাসন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। অনসূয়া ভোঁড়ের অভিযোগ, ২০১৮ সালে রায়দিঘি থানার অন্তর্গত মহামায়া গ্রামের অনসূয়ার সঙ্গে নোদাখালি থানার মলঙ্গদ্বারের বাসিন্দা অভয়ের বিয়ে হয়। দম্পতির সাড়ে তিন বছরের এক কন্যাসন্তানও রয়েছে। কন্যাসন্তান হওয়ার পর থেকেই পারিবারিক অশান্তির সূত্রপাত। প্রতিনিয়ত স্ত্রীকে প্রাণে মারার হুমকি এবং টাকা চাওয়াও হত বলে অভিযোগ জানিয়েছেন অনসূয়া দেবী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ৩০শে জুন নোদাখালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন অনসূয়া ভোঁড়। তাঁর কথায়, এমন ব্যক্তি, যিনি তাঁর নিজের স্ত্রী-সন্তানকেই দেখেন না, সেই তিনিই ভোটে জিতলে কী করে সমাজের উন্নয়ন করবেন? ক্ষোভে বিজেপি প্রার্থী স্বামীর দেওয়াল লিখনে পায়ের চটি খুলে মারতে মারতে দেওয়াল লিখন মুছে ফেলারও চেষ্টা করেন তিনি। স্ত্রীর মতে, ভোটে দাঁড়ানোর কোনও অধিকারই নেই তাঁর স্বামীর। যদিও ওই বিজেপি প্রার্থীর দাবি, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার পরও মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় পারিবারিক বিবাদকে কাজে লাগিয়েছেন বজবজ ১ নম্বর ব্লকের এক তৃণমূল নেতা। শাসকদলের হুমকিতেই নাকি তাঁর স্ত্রী অভিযোগ করেছেন। পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বজবজ ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি বুচান বন্দ্যোপাধ্যায়। “বিষয়টি সম্পূর্ণভাবেই ওঁদের পারিবারিক বিষয়। ভোটের আগে তাঁদের ঝামেলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় উপায় না পেয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করছেন ওই বিজেপি প্রার্থী। ওঁর স্ত্রীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ পদক্ষেপ নেবে। তৃণমূলের এ ব্যাপারে কোনও ভূমিকা নেই”, সাফ বক্তব্য তাঁর।