জাতিদাঙ্গার আগুনে এখনও উত্তপ্ত বিজেপিশাসিত মণিপুর। উত্তর-পূর্বের এই ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যে এখনও আয়ত্তে আসেনি হিংসার পরিস্থিতি। মেলেনি তেমন সুরাহাসূত্র। ঔদাসীন্য ও দীর্ঘসূত্রিতার জন্য ইতিমধ্যেই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। এই আবহেই তাদের অস্বস্তিতে বাড়ালেন খোদ গেরুয়া-নেত্রী! রাহুল গান্ধীর অকুণ্ঠ প্রশংসা শোনা গেল মণিপুরের বিজেপি রাজ্য সভাপতি অধিকারীমায়ুম শারদা দেবীর মুখে। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে রাহুল গান্ধীর মণিপুর সফরের প্রশংসা করি আমি।” তাঁর আরও বক্তব্য, রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে রাজনীতি হওয়া উচিত নয়। বৃহস্পতিবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যে গোষ্ঠীহিংসায় ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে শরণার্থী শিবিরে যান রাহুল গান্ধী। যদিও ইম্ফল থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার যেতেই তাঁর কনভয় আটকে দেওয়া হয়। পড়ে অবশ্য হেলিকপ্টারে চূড়াচাঁদপুরে পৌঁছান রাহুল। এছাড়াও বিষ্ণপুর শরাণার্থী শিবিরে গিয়ে দেখা করেন জাতিহিংসায় ঘরছাড়াদের সঙ্গে। দেন শান্তির বার্তা।
উল্লেখ্য, কংগ্রেস নেতার সফর নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হলেও মণিপুরে নিয়ে রাহুল গান্ধী টুইট করেন, “সরকার আমাকে বাধা দিলেও মণিপুরের মানুষ আমাকে স্বাগত জানিয়েছে, ভালবাসা দিয়েছে। মণিপুরের নিরাময় প্রয়োজন। শান্তি আমাদের একমাত্র অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।” শনিবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে শারদা দেবী বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি রাহুল গান্ধীর রাজ্য সফরের প্রশংসা করি। তবে পরিস্থিতির সমাধান এবং শান্তি ফেরানোর দিকে নজর দিতে হবে। বিষয়টি রাজনীতি হওয়া উচিত নয়।” যদিও রাহুল গান্ধীর মণিপুর সফর নিয়ে কটাক্ষ করেছেন একাধিক বিজেপি নেতা। তাদের অন্যতম অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, মণিপুরে বিদ্যমান বিভাজন তীব্রতর করার জন্য রাজনৈতিক নেতার পরিবর্তে সহানুভূতি প্রয়োজন। আর এবার রাহুলের তারিফ করলেন খোদ মণিপুরের বিজেপি প্রধান। প্রসঙ্গত, গত প্রায় দু’মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। সম্প্রতি সেখানে গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর সফরের পরও পরিস্থিতির উন্নতি হয়ন। বিরোধীদের ক্রমাগত আক্রমণের মুখে পড়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই গত শনিবার সর্বদল বৈঠক ডাকেন শাহ। মেতেই-কুকি সংঘাতে এখনও পর্যন্ত মণিপুরে প্রাণ হারিয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি মানুষ। আতঙ্কে দিন গুজরান হচ্ছে এলাকাবাসীর।