শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটের কাউন্টডাউন। দিনকয়েক পরেই রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন। জোরকদমে চলছে প্রচারপর্ব। এর মধ্যেই অভিনব চিত্র ধরা পড়ল পুরুলিয়ার বলরামপুরে। গ্রামের ‘বউদি’কে জেতাতে রং-তুলি ধরেছেন গ্রামেরই দুই তরুণী! ঘাসফুল এঁকে দেওয়াল লিখছে তারাই। পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকের ঘাটবেড়া-কেরোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮ নম্বর আসনের তৃণমূল প্রার্থী তনুজা কুমার। তাঁর সমর্থনে দেওয়াল লিখনে কোনও পেশাদার শিল্পী নেই। তাতে যদিও সমস্যা হয়নি একেবারেই। এগিয়ে এসেছেন এলাকার দুই তরুণী প্রতিমা কুমার ও সুশান্তি মান্ডি। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়ার সময় এই জেলায় ছিল তীব্র তাপপ্রবাহের প্রকোপ। তারপর টানা বর্ষণ। এই পরিস্থিতিতে এই এলাকায় এখনও দেওয়াল লিখনের কাজ শেষ হয়নি। তাই কাজ দ্রুত শেষ করতে মাঝেমধ্যেই ওই দুই তরুণীর সঙ্গী হচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী তনুজা কুমার। বিভিন্ন ভোট প্রার্থীদের সমর্থনে দলের কর্মী-সমর্থক এমনকী ভীষণ প্রয়োজনে নেতারাও রঙ-তুলি ধরেন। দেওয়াল লেখাতে পেশাদার শিল্পীদের কাজে লাগাতে হয়। কিন্তু এই ঘাটবেরা-কেরোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮ নম্বর আসন একেবারেই ব্যতিক্রম।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিমা কুমারের বাড়ি ৮ নম্বর সংসদে কুমারডিতে। ওই এলাকার জুনিয়ার হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তিনি। অন্যদিকে সুশান্তি মান্ডি ওই এলাকার রাঙ্কুরডির বাসিন্দা। বেশ কিছু দিন আগে ঘাটবেড়া-কেরোয়া হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছেন। তবে প্রতিমা ও সুশান্তি শুধু একে অপরের পরিচিত নন, তাঁরা দু’জনই ছোটবেলা থেকে আঁকতে ভালবাসেন। আর সুশান্তি ঘরের দেওয়াল নানান কারুকাজে সাজিয়ে তুলতে পারেন। তাদের সহরায় উৎসবে সুশান্তির তুলির টানে দেওয়াল জুড়ে যে অপরূপ ছবি ফুটে ওঠে, তা মুগ্ধ করে সকলকেই। ফলে ভোটের দেওয়াল লিখনে সুশান্তির এভাবে এগিয়ে আসা অনেকেরই প্রশংসা কুড়িয়েছে। তার হাতে রঙ-তুলিতে দেওয়াল লিখন চোখ টানছে। তৃণমূল প্রার্থী তনুজা কুমার বলেন, “আমি এই প্রথম ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি, এটা ঠিক। কিন্তু এই ক’দিনে বুঝতে পেরেছি, ভোটে প্রার্থী হওয়া মানে অনেক কাজ। তার মধ্যে দেওয়াল লিখন একটা বড় বিষয়। আর সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটাই আমার পরিচিত দু’জন তরুণী দায়িত্ব নেওয়ায় আমার পক্ষে খুব সুবিধা হয়েছে। দলীয় নেতৃত্বকেও এ বিষয়ে মাথা ঘামাতে হচ্ছে না। তারা বরং অন্য প্রচারের কাজ করছেন।” বউদির হয়ে দেওয়াল লিখতে পেরে আপ্লুত সুশান্তি ও প্রতিমার। “গ্রামের বউদি আমাদের প্রার্থী হয়েছেন। তাই বউদিকে জেতাতে আমরাই দু’জন দেওয়াল লিখনের দায়িত্ব নিয়েছি। ভোট ঘোষণা হওয়ার পর তাপপ্রবাহ ছিল আর তারপর টানা বৃষ্টি। তাই দেওয়াল লিখতে দেরি হচ্ছে। আর এক দু’-দিনের মধ্যে এই কাজ সব শেষ হয়ে যাবে”, জানিয়েছেন তাঁরা।