লাগামহীন ও বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে জড়াতে বরাবরই পটু বিজেপি নেতারা। একাধিক ক্ষেত্রে মিলেছে এর প্রমাণ। এবার পঞ্চায়েত ভোট-পূর্ববর্তী আবহেও তার অন্যথা হচ্ছে না। এবার হাওড়ার শ্যামপুরে র্যালিতে যোগ দিয়ে তিনি ভোটের দিন বুথে তৃণমূলের লোকেদের মাথা ফাটানোর নিদান দিয়ে বসলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার! পাশাপাশি বিডিওদেরও পিঠে লাঠির ঘা দেওয়ার পরামর্শও দিলেন তিনি। শনিবার তিনি হাওড়ার শ্যামপুরে হোগলাসি থেকে দেউলি বাজার পর্যন্ত একটি র্যালিতে যোগ দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে। সেখানেই এহেন রুচিহীন মন্তব্য শোনা যায় তাঁর মুখে। সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ”নির্বাচনের দিন টেবিল ছাড়বেন না। মাথা ফাটে ফাটবে। হাত ভাঙে ভাঙবে। যদি মাথা ফাটাতে হয় তাও ফাটাবেন। জামিন করার দায়িত্ব আমার। বিডিওদের বলা হয়েছে, বেশি বেশি ব্যালট ছাপানোর জন্য। বিডিওরা যদি ব্যালট ছাপে, বিডিওদের পিঠেও লাঠির ছাপ দিয়ে দেবেন। আমি বাঁচাব তারপর। ভয় পাবেন না।”
এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। জানান, ”আমি জানি ওসি, আইসিদের দিয়ে বুথ জ্যাম করানোর চেষ্টা হচ্ছে, ভোট করানোর চেষ্টা হচ্ছে। বেশি বেশি ব্যালট ছাপা হচ্ছে। আপনারা ব্যালট বাক্স পাহারা দেবেন। ব্যালট বাক্স যখন পুলিশ স্ট্রং রুমে নিয়ে যাবে তখন আপনারাও ঝান্ডা ও ডান্ডা নিয়ে পুলিশের পিছনে পিছনে যাবেন। ডুপ্লিকেট ব্যালট ঢোকানো হচ্ছে কিনা দেখবেন।” কেবল তাই নয়, ইডি-সিবিআইকে ব্যবহার করা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল বারবার যে অভিযোগ তোলে, তাতেই কার্যত সিলমোহর দিয়ে বসেন সুকান্ত। বলেন, ”চোর নেতাদের তিহারে পাঠাব। এখানেও নেতাদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বলে দিন, ভোটে তেড়িমেড়ি করলে আগেই ব্যবস্থা হয়ে যাবে।” তাঁর বক্তব্যকে কড়া নিন্দায় বিঁধেছেন শ্যামপুর এলাকার তৃণমূলের সম্পাদক শ্যামসুন্দর মেটিয়া। ”উনি অধ্যাপক মানুষ। এই ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য ওঁর শোভা পায় না। আসলে ওঁরা তো সব জায়গায় পঞ্চায়েতে প্রার্থী দিতে পারেননি। সংগঠন নেই। তাই হতাশা থেকেই এই ধরনের কথা বলছেন। এমন কুরুচিকর কথা বললে ওঁদের সমর্থকরা কী শিখবেন?”, প্রশ্ন শ্যামসুন্দরের।