চাঞ্চল্য ছড়াল মার্কিন মুলুকে। এবার আমেরিকা সফরকারী নরেন্দ্র মোদীকে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করে চরম হেনস্থার শিকার হলেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক। যা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল হোয়াইট হাউস। বাইডেন প্রশাসন জানিয়ে দিল, তারাও এ ব্যাপারটা শুনেছে। এমন ঘটনা মোটেও বরদাস্ত করা হবে না। উল্লেখ্য, ৯ বছরের সরকারের মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কোনও সাংবাদিক বৈঠক করেননি। কিন্তু আমেরিকায় রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠক এড়ানোর উপায় ছিল না। এ ধরনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করা একটি কূটনৈতিক রীতি। হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মোদীর বৈঠকের পর তাঁরা যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তখনই তাঁকে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মহিলা সাংবাদিক সাবরিনা সিদ্দিকি। সাবরিনা প্রশ্ন তুলেছিলেন, “ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু সেখানে সংখ্যালঘু মুসলমানদের সুরক্ষা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে কেন?” জবাবে প্রধানমন্ত্রী অকুণ্ঠভাবে বলেছিলেন, ভারতের শিরায় শিরায় রয়েছে গণতন্ত্র। এখানে জাতি বা ধর্মের কারণে কোনও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয় না।
এরপর এই প্রশ্নের জন্যই সাংবাদিক সাবরিনাকে অনলাইনে হেনস্থা করা শুরু হয়। সোমবার হোয়াইট হাউসের একটি সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিক কেলি ও’ডনেল জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার জন্য সিদ্দিকিকে অনলাইনে ভারত থেকে চূড়ান্ত হেনস্থা করা হচ্ছে, এবং সেই হেনস্থাকারীদের মধ্যে রয়েছেন বেশ কিছু রাজনীতিবিদ।।ও’ডনেল এই বিষয়ে হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মার্কিন প্রশাসনিক আধিকারিক জন কিরবি বলেন, “আমরা এই হেনস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, এটা বরদাস্ত করা যায় না। আমরা যে কোনও পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের এই হেনস্থার প্রতিবাদ জানাই কারণ এটা গণতন্ত্রের মূল রীতিনীতি বিরুদ্ধ।” এবিষয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র প্রণব ঝা মঙ্গলবার কটাক্ষের সুরে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সব প্রশ্নের উর্ধ্বে। কারও স্বৈরাচারী মানসিকতা থাকলে এরকম করে থাকে। ভারতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, বাক স্বাধীনতা এই সবই বর্তমান জমানায় আক্রান্ত।” প্রসঙ্গত, অতীতে অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বহুবার সাংবাদিক বৈঠক করেছেন। সরকারের সমালোচনা করে প্রশ্ন উঠলেও সহিষ্ণুতার সঙ্গে জবাব দিতেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে মনমোহন সিংহও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতেন। বিদেশ সফর সেরে ফেরার সময়ে সাংবাদিক বৈঠক ছিল নিয়মিত অভ্যাস। মোদী জমানায় সেসব অতীত। গত ৯ বছরে তাঁর যে ক’টি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে, তা সাজানো বলে বারবার অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। নিন্দায় সরব হয়েছে অন্যান্য মহলও।