শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। বেজে গিয়েছে ভোটের দামামা। আর বেশি দেরি নেই। কিছুদিন পরেই বাংলাজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ। আর ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন আরও বেশি করে অস্বস্তি বাড়ছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। ফুটে উঠছে সংগঠনের বেহাল পরিস্থিতি। বাংলার এসে বারবার ৩৫টি আসনের আবদার করেছেন অমিত শাহ। কিন্তু বঙ্গভূমে যে তাঁর দলের হাল তথৈবচ, তা আরও একবার প্রকাশ্যে এল। রাজ্যে এমন কোনও জেলা নেই, যেখানে পদ্মশিবির পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১০০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে! বিশেষ করে হাওড়া, বর্ধমান, বীরভূম, দুই ২৪ পরগনা, মালদা, মুর্শিদাবাদের মতো একাধিক জেলায় বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ। তা এখন হাড়ে হাড়ে বুঝেও গিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং বঙ্গ বিজেপির তরফে প্রাপ্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় ৯০ শতাংশের বেশি আসনেই প্রার্থী দিতে পেরেছে গেরুয়া শিবির। দক্ষিণ দিনাজপুর এবং কোচবিহার জেলাতেও ৮০ শতাংশের বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে। কিন্তু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদা ও উত্তর দিনাজপুরে কমবেশি ৫০ শতাংশ আসনে প্রার্থী পেয়েছে পদ্মশিবির। আবার জঙ্গলমহলের বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ায় ৭০ শতাংশেরও বেশি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। এছাড়া দুই মেদিনীপুরেও পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে আশাব্যঞ্জক।
তবে কেবল উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহলের সংগঠনের ওপর ভরসা করে যে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করা যাবে না, তা ভালভাবেই জানেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবুও বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব এখন ১০০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে না পারার ব্যর্থতাকে আড়াল করতে ৭০ কিংবা ৮০ শতাংশের বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিসংখ্যানকে ফলাও করে দেখাতে চাইছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন দেখতে চাইছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিবেষ্টিত পদ্ম নেতারা বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে কোনও সাফল্য তুলে ধরতে পারে কিনা। যদিও পদ্মশিবিরের অভিজ্ঞ কিছু নেতার দাবি, জেলা পরিষদ দখলের কোনও অবস্থাতেই নেই বিজেপি। ১০-১২টি পঞ্চায়েত সমিতিতে তাঁরা জয়ের মুখ দেখতে পারে, কিন্তু সেখানে শেষ পর্যন্ত তাঁরা বোর্ড গড়তে পারবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দলের যারা জিতবেন, তাঁরা কতদিন বিজেপিতে থাকবেন, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান গেরুয়া-নেতৃত্ব।