স্বামীবিয়োগ ঘটেছে তাঁদের দুজনেরই। এবার সেই দুই মহিলাকে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে বেছে নিল শাসকদল তৃণমূল। জামুড়িয়ায় জেলাপরিষদের প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা দল তাঁদের কথা মনে রাখায় আপ্লুত লতিফা কাজি ও পুতুল বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে বামেদের হাতে খুন হন রবীন কাজি সেই সময় ছুটে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতায় আসার পর জামুড়িয়ায় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য করা হয়েছিল তাঁর স্ত্রী লতিফা কাজিকে। এবার আরও গুরুত্ব দিয়ে জেলা পরিষদের টিকিট দেওয়া হল তাঁকে। আবেগাপ্লুত লতিফা দেবী জানান, “১২ বছর আগে স্বামীর আত্মবলিদান ভোলেননি আমাদের মা মমতা। দলের হয়ে জনগণের পাশে থাকব।” অন্যদিকে, মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায় জামুড়িয়া গ্রামীণ এলাকার উল্লেখযোগ্য দক্ষিণপন্থী নেতা ছিলেন। তৃণমূলের জামুড়িয়া ২ নম্বরের ব্লক সভাপতির পাশাপাশি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও ছিলেন। দীর্ঘদিনের দলীয় নেতার শরীরে আচমকাই থাবা বসায় ক্যানসার। ২০২০ সালে মৃত্যু হয় তাঁর। এবার তাঁর স্ত্রী পুতুল বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলাপরিষদের প্রার্থী করেছে ঘাসফুল শিবির।
এপ্রসঙ্গে পুতুলদেবী জানিয়েছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা শুধু মা বা দিদি বলি না। এই দল তাঁদের প্রতিটি কর্মীর পরিবারের পাশে থাকে। আমি কোনদিন সক্রিয় রাজনীতি করিনি। তবে স্বামীর পাশে থাকার চেষ্টা করে গিয়েছি। তাঁর আদর্শকে সামনে রেখে রাজনীতি করব।” শাশুড়ির মনোনয়নের সাক্ষী হিসাবে সই করেছেন তাঁর বউমা মধুরিমা মিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অনেক দল জীবিত অবস্থায় দলের নেতাকর্মীর খোঁজ রাখে না আর আমাদের দল কর্মীর মৃত্যুর পরও তাঁকে সম্মান জানায়।” শাসকদল শিক্ষিত যোগ্য প্রার্থীদের জেলাপরিষদের প্রার্থী করে স্বচ্ছতার বার্তা দিতে বদ্ধপরিকর। তবে স্বচ্ছতার পাশাপাশি কর্মতৎপরতাও যে সমান গুরুত্ব পারে তা বলাই বাহুল্য। এবার জেলাপরিষদ আসনটি সাধারণ। শাসকদল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেলে কে হবে সভাধিপতি তা কিন্তু কোটি টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে। তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে প্রতিটি জায়গায় আমরা বোর্ড গঠন করব তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। জেলা পরিষদ দখল করে এমন বোর্ড গঠন করা হবে যাতে তাঁরা পুরসভার উন্নয়নকেও টেক্কা দিতে পারে।” তবে এবার প্রার্থীপদ পাননি বিদায়ী সভাধিপতি সুভদ্রা বাউড়ি। মনোনয়ন পর্বের শেষদিনে তাঁর স্বামী বিশ্বনাথ বাউড়ি মনোনয়ন জমা দেন। বিশ্বনাথবাবুই পশ্চিম বর্ধমান জেলাপরিষদের প্রথম সভাধিপতি ছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর স্ত্রী সভাধিপতি হন। “বুধবার রাতে দলের নেতৃত্ব থেকে জানানো হয় স্ত্রী নয় আমাকে মনোনয়ন জমা করতে হবে। আমরা দলের অনুগত সৈনিক। দলের নির্দেশ মেনে মনোনয়ন জমা করেছি”, স্পষ্ট জানান বিশ্বনাথবাবু।