এনসিইআরটির দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক থেকে পিথাগোরাসের উপপাদ্য, ডারউইনের তত্ত্ব, মহাত্মা গান্ধীর জীবনী, পর্যায় সারণি, গণতন্ত্র ও বৈচিত্র্য, বিভিন্ন গণ আন্দোলনের ইতিহাস , বিশ্ব রাজনীতিতে ঠান্ডা যুদ্ধের ইতিহাস ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তবে এবার বাদ পড়ল সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দুটি। তেলেঙ্গানার দশম শ্রেণির সরকারি পাঠ্যপুস্তকে সংবিধানের প্রস্তাবনা অংশে এই দুটি শব্দ নাকি ছাপাই হয়নি!
পাঠ্যবইয়ের শুরুতেই থাকে সংবিধানের প্রস্তাবনা। সেখানে ভারতকে সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তেলেঙ্গানার স্টেট কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং থেকে প্রকাশিত দশম শ্রেণির সোশ্যাল স্টাডিজের বইতে নাকি এর মধ্যে থেকে বাদ পড়েছে সমাজতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ শব্দদুটি। দ্য তেলেঙ্গানা স্টেট ইউনাইটেড টিচার্স ফেডারেশনের তরফে এই ঘটনাকে ইতিমধ্যেই ‘বিরাট ভুল’ বলে দাবি করে প্রকাশনা সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।
সংবিধানের প্রস্তাবনায় শুরু থেকেই অবশ্য এই শব্দ দুটি ছিল না। ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বর মাসের ৪২-তম সংশোধনীর সময় এই দুটি শব্দ প্রস্তাবনার অন্তর্ভুক্ত হয়। উল্লেখ্য, হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির রমরমার যুগে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্রের অস্তিত্ব। সেই অবস্থায় বিভিন্ন স্কুল পাঠক্রমে বদল করে গণআন্দোলন এবং ভারতে বিদেশি শাসকদের দীর্ঘ শাসনের ইতিহাস সিলেবাস থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার অস্তিত্ব সংকটাপন্ন বলেও মনে করেন রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে পাঠ্যবইতে এই দুটি শব্দ বাদ যাওয়া কি সত্যিই ভুল, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে দাবি দ্য তেলেঙ্গানা স্টেট ইউনাইটেড টিচার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছবা রবির।