বিধানসভা ভোট পরবর্তী সময়ে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলেই তা রাজনৈতিক খুন বলে দাবি করত বিজেপি ও অন্য বিরোধী দলগুলি। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলত। এমনকী, ভোট পরবর্তী হিংসার কথা বলে সিবিআই তদন্তও দাবি করে হা কোর্টে যায় তারা। হাই কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দেয় অনেকগুলি ঘটনায়। পূর্ব বর্ধমানের রায়নার বিজেপি কর্মীর বাবার ‘খুনের’ মামলায় রাজ্যের শাসক দলের দাবিকেই কার্যত সিলমোহর দিয়েছে আদালতে পেশ করা সিবিআই রিপোর্ট।
রায়নার বাসুদেবপুর গ্রামের বিজেপি কর্মী প্রদীপ রুইদাসের বাবা কার্তিক রুইদাস (৫৯)-এর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনার সিবিআই তদন্ত চলছিল ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায়। সেই মামলায় বর্ধমান সিজেএম আদালতে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সাব ইন্সপেক্টর গৌতম যোশী চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করেন। সেই রিপোর্টে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, খুনের অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। কার্তিক রুইদাস আত্মঘাতী হয়েছেন বলেও সিবিআই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় কার্তিকবাবুর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগেরও কোনও প্রমাণ পায়নি সিবিআই। সিবিআই রিপোর্ট পাওয়ার পর বর্ধমান আদালতের সিজেএম চন্দা হাসমত অভিযোগকারী তথা মৃতের ছেলে প্রদীপ দাসের মতামত জানতে চেয়ে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সিবিআই তদন্তে নেমে জানতে পারে প্রদীপ ২০২০ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কার্তিকবাবু তৃণমূলই করতেন। সিবিআই পরিবারের সকল সদস্যর সঙ্গে কথা বলে। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলে। তারা জানতে পারে কার্তিকবাবুর বাড়িতে হামলাই হয়নি। ভাঙচুর বা হুমকি দেওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে ফল প্রকাশের দিন গ্রামে মিছিল করে তৃণমূল। প্রদীপবাবু বাড়ির টিনের দরজায় ধাক্কাধাক্কির কথা জানিয়েছিলেন। তেমন কোনও প্রমাণ পায়নি সিবিআই। হাওয়ায় টিনের দরজায় শব্দ হতে পারে বলে সিবিআই জানিয়েছে।