আরও একবার দুর্ভাগ্য সঙ্গী হল ক্রোয়েশিয়ার। এবার উয়েফা নেশনস লিগ ফাইনালে উঠেও খেতাব হাতছাড়া হল তাদের। ২০১৮-এর বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরেছিলেন লুকা মদ্রিচরা। গতবছর কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা বিরুদ্ধে হার মানতে হয়েছিল ক্রোটদের। আর রবিবার রাতে টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়াকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে ট্রফি নেশনস লিগ জিতল স্পেন। ২০২১ সালের নেশনসের লিগের ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হেরে গিয়েছিল তারা। আর এবার জিতেই মাঠ ছাড়ল স্প্যানিয়ার্ড-বাহিনী। প্রসঙ্গত, গত বছর বিশ্বকাপে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল স্পেন। তার পরেই দলের কোচ পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন লুইস এনরিকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নেন লুইস দে লা ফুয়েন্তে। রবিবার ১২০ মিনিট শেষেও কোনও দল গোল করতে না পারায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। স্প্যানিশ সমর্থকদের মনে বারবার উঁকি দিতে থাকে ছ’মাস আগের বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের বিষণ্ণ স্মৃতি। কিন্তু গোলরক্ষক ইউনাই সিমনের হাত তাঁদের স্বপ্ন চুরমার হতে দেয়নি। টাইব্রেকারে দুজন ক্রোয়েশীয় ফুটবলারের ( ম্যাহের, পেতকোভিচ) শট বাঁচিয়ে দেন সিমন। আর দানি কার্ভাহালের শট জালে জড়িয়ে যেতেই ট্রফি জয় নিশ্চিত হয়ে যায় স্পেনের। হতাশায় অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি ক্রোয়েশীয় অধিনায়ক মদ্রিচ।
উল্লেখ্য, ফাইনালের আগে স্পেনের রদ্রি হার্নান্দেস বলেছিলেন যে, জয়ের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে চান তাঁরা। নেশনস লিগ দিয়েই সেটা শুরু করার কথা বলেছিলেন তিনি। সেই কথা মাথায় রেখেই ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণে ওঠে স্পেন। কিন্তু আলভারো মোরাতার শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ধীরে ধীরে ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিতে শুরু করেন মদ্রিচেরা। মাঝমাঠের দখল নেয় ক্রোয়েশিয়া। স্পেনের রক্ষণভাগ কিছুটা এগিয়ে খেলছিল। সেই সুযোগটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন মদ্রিচেরা। কিন্তু গোল করতে পারেননি। কখনও রক্ষণভাগে বাধাপ্রাপ্ত হন, কখনও গোলরক্ষক সিমোনের হাতে। ক্রোয়েশিয়া অনেক বেশি সরাসরি ফুটবল খেলার চেষ্টা করছিল। পায়ে বেশি ক্ষণ বল রাখছিলেন না ইভান পেরিসিচেরা। স্বাভাবিকভাবেই ফুয়েন্তের দল সমস্যায় পড়ে যায়। ক্রোয়েশিয়ার ছক ভাঙতে পারছিল না স্পেন। চেষ্টায় ত্রুটি রাখেননি জর্ডি আলবা। স্পেনের লেফট ব্যাক বার বার আক্রমণে ওঠেন। ৯০ মিনিটের মধ্যে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। পরে ৩০ মিনিটের অতিরিক্ত সময়েও গোল হয়নি। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ছ’টি পেনাল্টি শটের মধ্যে পাঁচটিতেই সফল হন স্পেনের ফুটবলাররা। ক্রোয়েশিয়ার দুই ফুটবলারের শট আটকে দেন গোলরক্ষক সিমনে। এরপর অব্যর্থ প্যানেঙ্কা শটে কার্ভাহাল বল জড়িয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার জালে। আর সেই সঙ্গে দীর্ঘ ১১ বছর পর ফের আর্ন্তজাতিক খেতাব জিতে নেয় স্পেন।