আরও একবার রাজনৈতিক সৌজন্যের দৃষ্টান্ত রাখল শাসকদল তৃণমূল। কয়েকদিন পরেই বাংলাজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোট-আবহে উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। বারবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে তৃণমূল ও আইএসএফ। এর মধ্যেই অনন্য সৌজন্যের চিত্র ধরা পড়ল এই এলাকায়। এক নিহত আইএসএফ কর্মীর দেহ কবর দেওয়ার কাজে হাত লাগালেন তৃণমূল প্রার্থী। গত বৃহস্পতিবার, মনোনয়ন জমার শেষ দিন ভাঙড়-২ ব্লকে ব্যাপক অশান্তি হয়। দু’পক্ষের সংঘর্ষে সে দিন যে তিন জনের প্রাণ যায়, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জয়পুর গ্রামের আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা। শনিবার মহিউদ্দিনের দেহ কবর দেওয়া হল গ্রামে। তাঁর বাড়ির পাশেই চালতাবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী রেজাউদ্দিন মোল্লার বাড়ি। মহিউদ্দিনের শেষযাত্রায় তিনিও পা মেলান। কবর খোঁড়া থেকে প্রয়োজনীয় নানা কাজে সাহায্য করেন। তাঁর সঙ্গে দলের আরও কিছু কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
এদিন রেজাউদ্দিন বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে। গ্রামে কারও কোন বিপদ হলে আমরা সবাই একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ি। মহিউদ্দিন আমার ভাইয়ের মতো। তাই তাঁর শেষকৃত্যের কাজ করতে এগিয়ে এসেছি।’’ ব্লক তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা সহকারী আহ্বায়ক আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, ‘‘মৃত্যু কখনওই কাম্য নয়। আমি ভীষণ মর্মাহত। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও সকলের মধ্যে সৌজন্যবোধও থাকা উচিত।’’ রেজাউদ্দিনের প্রশংসা শোনা গিয়েছে আইএসএফের ব্লক সভাপতি রাইনুর হকের মুখে। ‘‘এটা ঠিক যে, আমাদের দলীয় কর্মীর মৃত্যুতে ওই তৃণমূল প্রার্থী এগিয়ে এসেছেন। তিনি আমাদের পাশে থেকে শেষকৃত্যের কাজ করেছেন। রাজনৈতিক মতবিরোধ সরিয়ে তিনি যে এগিয়ে এসেছেন, এ জন্য আমরা ওঁকে সাধুবাদ জানাচ্ছি’’, জানান রাইনুর।