কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটল রাজ্য শিক্ষা দফতর। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যে বারবার অভিযোগের উঠেছে বেসরকারি স্কুলগুলির বিরুদ্ধে। কখনও বেশি হারে ফি নেওয়া, আবার কখনও ব্যবস্থাপনা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তবে নির্দিষ্ট কোনও কমিশন না থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ নিয়ে অভিভাবকদের ছুটতে হয় আদালতে। সেই সমস্যার সমাধানে এবার রেগুলেটরি কমিশন গঠন করতে চলেছে রাজ্য। বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলেই এই কমিশনে অভিযোগ জানানো যাবে। মাসখানেক আগেই রাজ্য সরকার এই কমিশন গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সূত্রের খবর, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই রেগুলেটরি কমিশন তৈরি করা হবে। প্রসঙ্গত, বেসরকারি হাসপাতালে বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানানো যায়। এই রেগুলেটরি কমিশনও অনেকটাই সেরকম। বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ এই রেগুলেটরি কমিশনে জানানো যাবে। এই কমিশনের নাম দেওয়া হতে পারে ‘প্রাইভেট স্কুল রেগুলেটরি কমিশন।’ শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রেগুলেটরি কমিশনের মাথায় রাখা হবে একজন প্রাক্তন বিচারপতিকে। এছাড়াও কমিশনে থাকবেন রাজ্য সরকারের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি। তাঁরা কোনও স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখবেন। সেক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে কমিশন।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষা মহলের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি স্কুলগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য রেগুলেটরি কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর এই কমিশন গঠনের কাজ শুরু করে দেয় শিক্ষা দফতর। সেই কাজ প্রায় শেষ। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই রেগুলেটরি কমিশন চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও কবে থেকে চালু হবে, সে বিষয়ে এখনও নির্দিষ্টভাবে শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে প্রশাসনিক আধিকারিকরা মনে করছেন, এর ফলে যেমন বেসরকারি স্কুলের একরোখা মনোভাব রোখা যাবে, তেমনই অভিভাবকদের অভিযোগেরও অনেকটা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে কমিশনে। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে কোভিডের পর থেকে প্রকট হয়ে উঠেছিল বেসরকারি স্কুল নিয়ে সমস্যা। লকডাউনের জেরে প্রায় সমস্ত মানুষই আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সেই মুহূর্তে বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল কোনওভাবেই ফি কমাতে রাজি হয়নি। তাই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের মামলাও হয়েছিল। এবার রেগুলেটরি কমিশন চালু হলে স্কুলগুলির এই মনোভাবে অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হবে, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।