বহুদিন পর গত রবিবারই ফের একবার একক মঞ্চ অনুষ্ঠান করতে দেখা গিয়েছে সঙ্গীতশিল্পী রূপম ইসলামকে। আর তার সেই একক নিয়েই শুরু বিপত্তি। সোশ্যাল মিডিয়ার একাংশ জুড়ে রব উঠল, ‘বয়কট রূপম ইসলাম!’ বিতর্কের মূলে রূপমের অনুষ্ঠানের মঞ্চসজ্জা। একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, রূপম যে মঞ্চে বসে গান গাইছেন, তার পিছনেই স্ক্রিনে বড় করে ভাসছে উমর খলিদের ছবি। হাত উপরে তোলা। সামনে রূপমেরও হাত তোলা। সম্ভবত কোনও প্রতিবাদের বা লড়াইয়ের গান গাইছেন তিনি, বা কিছু বলছেন। সঙ্গীতশিল্পী নিজেই প্রথম পোস্ট করেন ছবিটি। আর তার পরেই কমেন্ট বক্সে বয়ে যায় সমালোচনার বন্যা।
দর্শক-শ্রোতাদের একাংশ দাবি করেছেন, যে উমর খলিদ ‘ভারতকে টুকরো টুকরো করার’ স্লোগান তুলে রাষ্ট্রদ্রোহের সাজা পেয়েছেন, সেই উমর খলিদের ছবি নিজের মঞ্চে বড় করে ব্যবহার করে রূপম আদতে বিচ্ছিন্নতাবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। কেউ কেউ তো আরও এককাঠি নীচে নেমে মনে করিয়ে দিয়েছেন, রূপম ইসলামের ধর্ম কী। কেউ আবার তাঁর স্ত্রীর নাম, রূপসা দাশগুপ্তর কথা উল্লেখ করে ইঙ্গিত করেছেন, ‘লাভ জেহাদ’-এর দিকেও। এই সমস্ত অভিযোগের ভিড়েই উঠেছে রূপম ইসলামকে বয়কটের দাবি। বলা হচ্ছে, রূপমও দেশদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত!
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে জেল হেফাজতে রয়েছেন জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতা উমর খলিদ। ইউএপিএ অ্যাক্টে ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছিল উমর-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। যদিও গত বছর ডিসেম্বর মাসে সেই মামলায় বেকসুর খালাস পান তিনি। কিন্তু আদালতের সেই রায়ে কোনও ভরসা নেই ‘ভক্ত’দের। তাঁদের আদালতে অবশ্য উমর খলিদ দোষী, দেশদ্রোহী। আর তাঁর ছবি মঞ্চে ব্যবহার করে একই দোষে দোষী রূপম ইসলামও। যদিও রূপম ইসলাম উমর খলিদের সপক্ষে কোনও মন্তব্য করেননি অনুষ্ঠানে, তোলেননি উমরের মুক্তির দাবিও। দেশের আরও বহু বিশিষ্ট জনের মতোই তিনি তাঁর অনুষ্ঠানে দাবি করেছিলেন, উমর খলিদের বিচার হোক।