অতিরঞ্জিত প্রচারে বরাবরই দড় বিজেপি। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশবাসীর উদ্দেশে একের পর এক গালভরা প্রতিশ্রুতির ঝড় বইয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তাদের সিংহভাগই বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। সম্প্রতি খরিফ মরশুমে, খাদ্যশস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ৫০-৮২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করে প্রচার চালিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, আদতে এটি মোদী সরকারের মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকের উপার্জন দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী, আজও তা পূরণ হয়নি কেন? কেন ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ফসল কেনা হয় না? উৎপাদন খরচের ওপর আরও ৫০ শতাংশ দাম কেন কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে না? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। ধানের ক্ষেত্রে গুজরাত সরকার প্রতি কুইন্টালে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রস্তাব করেছিল ২,৭৫০ টাকা, অসম ৩,১৩২ টাকা, মহারাষ্ট্র ৪,৫৩৪ টাকা। কিন্তু মোদী সরকার ঘোষণা করেছে ২,১৮৩ টাকা! এ তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই তুঙ্গে বিতর্ক।
পাশাপাশি, জোয়ার, বাজরা, ভুট্টার ক্ষেত্রেও একইভাবে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিরও প্রস্তাব অগ্রাহ্য করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খাদ্যশস্য উৎপাদনের ব্যয়ের সঙ্গে ৫০ শতাংশ যোগ করে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল কমিশন ফর এগ্রিকালচারাল কস্টস অ্যান্ড প্রাইসেস। কিন্তু মোদী সরকার তা মানেনি। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২-২৩ সালে ১৩০ মিলিয়ন টন ধান উৎপাদন হলেও সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে সংগ্রহ করেছে মাত্র ৬৫ মিলিয়ন টন। গমের ক্ষেত্রে ১০৬ মিলিয়ন টন গম উৎপাদন হলেও, সরকার মাত্র ১৮ মিলিয়ন টন কিনেছে। সরকার সংগ্রহ না করায় কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েন। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের অভিযোগ, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নামে কেবলই লম্বাচওড়া দাবি করে যাচ্ছে মোদী সরকার। কৃষকের উপার্জন দ্বিগুণ হয়নি। বিরোধীরা আরও দাবি করেছে, কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প থেকে দু কোটি কৃষকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কৃষি পরিকাঠামো তহবিল খাতে প্রতি বছর এক লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিলেও, গত তিন বছরে বাস্তবে বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ১২ হাজার কোটি টাকা। ফসল বিমার নামে বিমা কোম্পানিগুলোকে লাভের বিরাট সুযোগ করে দিয়েছে মোদী সরকার, অভিযোগ উঠেছে এমনই।
![এমএসপি নিয়ে মোদী সরকারের গালভরা প্রচার মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়! - স্পষ্ট অভিযোগ বিরোধীদের](https://ekhonkhobor.com/wp-content/uploads/2023/06/4-2-1.jpg)