গতকাল উড়িষ্যার বালেশ্বরের কাছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমন্ডল এক্সপ্রেস। রাত থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। গুরুতর জখমও হয়েছেন বহু মানুষ। অভিশপ্ত ওই ট্রেনে ছিলেন গোসাবার কর্মকার পরিবারের চারজন। এরা প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক। অন্ধ্রপ্রদেশে ধান রুইতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কর্মকার পরিবারের চার জন ছাড়াও গোসাবার সাতজেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আনন্দপুর গ্রামের আরও দুই জন।
গতকাল দুপুর প্রায় তিনটে নাগাদ ট্রেনে চাপেন তাঁরা। আর রাত প্রায় ৮টা নাগাদ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামে খবর পৌঁছায় দুর্ঘটনার। তারপর থেকেই প্রতিটি মুহূর্ত দুশ্চিন্তায় কাটছে চঞ্চলা কর্মকারের। তাঁর ভাই রঞ্জন কর্মকার, ছেলে সনৎ কর্মকার ও দুই বৌমা শ্যামলী কর্মকার, কবিতা কর্মকার ছিলেন ওই ট্রেনে। বালেশ্বরে ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে চঞ্চলাদেবী টানা ফোন করে যাচ্ছেন তাঁদের। কিন্তু ভাই রঞ্জন কর্মকার ছাড়া আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি তিনি।
ফোনে তিনি জানতে পেরেছেন, রঞ্জন কর্মকারের দু’টি পায়ে মারাত্মক চোট লেগেছে। রঞ্জনবাবুকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রঞ্জনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেও ছেলে কিংবা দুই বৌমার কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি চঞ্চলাদেবী। রঞ্জনবাবুকে যখন তিনি ফোন করেছিলেন, তখনও তাঁদের বিষয়ে কোনও খোঁজ পাননি তিনি। ফলে প্রবল উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় কাটছে তাঁর।
শুধু এই একটি গ্রামই নয়, সুন্দরবন এলাকায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে অনেক মানুষই এই ট্রেনে চেপে অন্ধ্রপ্রদেশে ধান রোয়ার কাজ করতে যাচ্ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে বাঁকুড়া জেলা থেকেও তিনজন যাত্রী ওই অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানা এলাকার বাঁকাদহ এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া বাকি দুইজন সোনামুখী থানা এলাকার হামিরহাটি পাতজোড় গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের তরফে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।