একদিকে মহাসমারোহে উদ্বোধন হল নতুন সংসদ ভবনের। সেখান থেকে গণতন্ত্রের বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর অন্যদিকে, টানতে টানতে দেশের বিখ্যাত কুস্তিগিরদের জেলে নিয়ে গেল দিল্লী পুলিশ। পাশাপাশি মারধর করা হল মহিলা কুস্তিগিরদের। পুরুষ পুলিশকর্মীরাও চড়াও হলেন মহিলাদের উপর। রবিবার এমনই দুই বিপরীত চিত্রের সাক্ষী থাকল রাজধানী। এ যে চরম লজ্জার, তা বলাই বাহুল্য। সম্মিলিতভাবে এর প্রতিবাদ করেছে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে রেসলারদের হেনস্তার প্রতিবাদ করেছেন। কংগ্রেসের তরফে প্রতিবাদ করা হয়েছে। সরব হয়েছে অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। পাশাপাশি, সমাজমাধ্যমেও বইছে নিন্দার ঝড়।
ফিরে যাওয়া যাক ২০১৬-তে। রিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ পদক পেয়ে গায়ে তেরঙ্গা জড়িয়ে পোডিয়ামে উঠেছিলেন সাক্ষী মালিক। ২০২০ টোকিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জিতে শূন্যে মুঠো ছুঁড়েছিলেন বজরং পুনিয়া। ২০১৮-এর এশিয়ান গেমসে ভিনেশ ফোগাটের সোনাজয়ের পর পোডিয়ামে বেজে উঠেছিল জাতীয় সঙ্গীতের সুর। প্রতিটি মুহূর্তেই গৌরবে কেঁপে উঠেছিল আসমুদ্রহিমাচল। অথচ, আজ রাজধানীর রাজপথে পুলিশের হাতে নিগৃহীত হলেন এঁরাই। বিজেপি সাংসদ তথা কুস্তি ফেডারেশন সভাপতি ব্রিজভূষণ সিংহের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার প্রতিবাদ করায়, দিনের পর দিন রাস্তায় পড়ে থাকতে হয়েছে তাঁদের। মাত্র দু’কিলোমিটার দূ’রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করছেন, ঠিক তখনই চ্যাম্পিয়ন কুস্তিগিরদের ভূলুণ্ঠিত হতে হল। সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া, ভিনেশ ফোগাট, সঙ্গীতা ফোগাট – প্রত্যেকেই পুলিশের হাতে নিগ্রহের শিকার হলেন। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে তুঙ্গে বিতর্কের ঝড়। মোদী সরকার ও প্রশাসনের সমালোচনায় মুখর হয়েছে একাধিক মহল। এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ বা অলিম্পিকের পোডিয়ামে যাঁদের গর্বে মাথা উঁচু হয়েছিল, আজ তাঁদের নিগৃহীত হতে দেখে কি লজ্জায় মাথা হেঁট হচ্ছে না দেশবাসীর? এভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়াই কি প্রাপ্য ছিল সাক্ষী-বজরঙ-ভিনেশ-সঙ্গীতাদের? প্রশ্ন তুলছেন নাগরিকরা।