প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে সোমবার দিল্লিতে বসতে চলেছে নীতি আয়োগের বৈঠক সেই বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন না। তিনি সিদ্ধান্ত বদল করে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৈঠকে যোগ দেবেন না বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, তেলেঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও, তামিলনাড়ুর এমকে স্ট্যালিন এবং দিল্লি ও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী যথাক্রমে অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং ভগবত মান।
সাম্প্রতিক অতীতে এতজন মুখ্যমন্ত্রীর নীতি আয়োগের বৈঠকে না থাকার নজির নেই। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, অবিজেপি শাসিত মুখ্যমন্ত্রীদের কেন এই সিদ্ধান্ত। নীতীশ কুমার গত দেড় দু-বছরে একটি বৈঠকেও যাননি। বিহারে তিনি বিজেপির সঙ্গে থাকার সময়ও মোদীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করেছেন। এবারও তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং অর্থমন্ত্রী বিজয় কুমারকে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র সবুজ সংকেত দেয়নি। যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গায় বৈঠকে অংশ নেওয়ার অনুমতি মেলেনি বাংলার অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দিল্লির রাজ্য সরকারের হাত থেকে অফিসারদের ট্রান্সফার-পোস্টিংয়ের ক্ষমতা যেভাবে অর্ডিন্যান্স করে কেন্দ্র নিজের হাতে নিয়েছে তা মানা যায় না। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই তাঁর নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কটের পদক্ষেপ। তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীরা অবশ্য কোনও কারণ দর্শানোর চিঠি দেননি প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর দফতরকে। তবে লক্ষণীয় হল, বিহার বাদে বাকি রাজ্যগুলিতে রাজ্যপালদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধ চরম আকার নিয়েছে। দিল্লিতে কেজরিওয়াল সরকারের আপত্তি উপরাজ্যপালের কার্যকলাপ। পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানায় সংঘাতের মূলে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালেরা আটকে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েও পরিস্থিতির বদল হয়নি।
প্রশাসনিক মহলের মতে, স্মরণকালের মধ্যে এতজন মুখ্যমন্ত্রীর নীতি আয়োগের বৈঠকে না থাকার নজির নেই। এর পিছনে তাৎক্ষণিক কারণ ভিন্ন হলেও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নীতি আয়োগের বৈঠকের বিষয় এবং আলোচনার পদ্ধতি নিয়ে গুরুতর আপত্তি আছে অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির। আগের যোজনা পরিষদের তুলনায় নীতি আয়োগের বহু ক্ষেত্রে মৌলিক ফারাকের একটি হল প্রতিষ্ঠানটি ক্রমে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের প্রবীণ মুখ্যমন্ত্রীদের অনেকেই মনে করছেন, শুধু প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার জন্য গোটা একটি দিন এবং সরকারি টাকা খরচের অর্থ হয় না।