ফুটবল ময়দানে ফের নেমে এল বর্ণবিদ্বেষের করার ছায়া। স্পেনীয় লিগে বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণ যদিও নতুন নয়। তবে রবিবারের ঘটনা কার্যত ছাপিয়ে গিয়েছে আগের ঘটনাগুলিকেও। এদিন মেস্তালা স্টেডিয়ামে (ভ্যালেন্সিয়ার ঘরের মাঠ) মুখোমুখি হয়েছিল ভ্যালেন্সিয়া ও রিয়াল মাদ্রিদ। ভ্যালেন্সিয়ার সমর্থকদের ক্রমাগত বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণের জেরে মাঠ ছেড়ে উঠে যেতে চাইলেন রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিভাবান তরুণ ফুটবলার ভিনিসিয়াস। ম্যাচ বন্ধ থাকল সাত মিনিট। কিন্তু এখনও কোনও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়নি। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঘটনার প্রতিবাদে কড়া বার্তা দিয়েছেন ভিনিসিয়াস। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেক ফুটবলারও। এদিন ভ্যালেন্সিয়ার কাছে ০-১ গোলে হারে রিয়াল। কিন্তু ম্যাচের মাঝে বার বার বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণ করা হয় ভিনিসিয়াসকে। তাঁর গায়ের রং নিয়ে কটাক্ষ করা হয়। ডাকা হয় ‘বাঁদর’ বলে। ভিনিসিয়াস এক বার তীব্র প্রতিবাদ করেন। গোলের পিছনে থাকা দুই সমর্থককে চিহ্নিত করে দেন। রিয়ালের তরফে খেলা সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়। রেফারি তা মানতে চাননি। বলেন, আগে মাঠের স্পিকারে সমর্থকদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হবে। তার পরেও একই ঘটনা ঘটলে খেলা বন্ধ করা হবে। কিন্তু ঘটনা তার পরেও থামেনি। ফলে খেলা বন্ধ রাখতে হয় সাত মিনিট। ৭০ মিনিটের মাথায় রেফারিকে দেখিয়ে এক সমর্থককে চিহ্নিত করে দেন ভিনিসিয়াস। দুই দলের ফুটবলাররা সমর্থকদের শান্ত করানোর চেষ্টা করেন।
যদিও এতে লাভ হয়নি কিছুই। পুলিশ দর্শকাসনে গিয়ে সমর্থকদের শান্ত করেন। স্টেডিয়ামের স্পিকারেও বার্তা শোনানো হয়। খেলা শুরুর পরেই ভ্যালেন্সিয়ার ফুটবলারদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেন ভিনিসিয়াস। ম্যাচের পর তিনি ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার নয়। লা লিগায় বর্ণবিদ্বেষ খুব স্বাভাবিক। প্রতিযোগিতার আয়োজকরা, ফুটবল সংস্থাও সেটাই মনে করে। বিপক্ষ দল এতে আরও উৎসাহ পায়। যে লিগে রোনাল্ডিনহো, রোনাল্ডো, ক্রিশ্চিয়ানো (রোনাল্ডো) এবং মেসির মতো ফুটবলাররা খেলে গিয়েছে, তা এখন বর্ণবিদ্বেষীদের দখলে চলে গিয়েছে। কিন্তু আমি শক্তিশালী এবং শেষ পর্যন্ত বর্ণবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে লড়াই করব।” ঘটনা প্রসঙ্গে রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলোত্তি বলেছেন, “যখন স্টেডিয়ামে কোনও ফুটবলারের উদ্দেশে ‘বাঁদর’ বলে চিৎকার করা হয় এবং কোচ সেই ফুটবলারকে তুলে নেওয়ার কথা ভাবেন, তার মানে লিগে বড় সড় সমস্যা রয়েছে। ম্যাচটা অবশ্যই থামিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। এমন ঘটনা ঘটা উচিত হয়নি। এর আগেও অনেক স্টেডিয়ামে এই ঘটনা ঘটেছে।” ভিনির পাশে দাঁড়িয়েছেন কিলিয়ান এমবাপে। ফরাসী ফুটবলার জানিয়েছেন, “তুমি একা নও। আমরা তোমার সঙ্গে রয়েছি এবং তোমাকে সমর্থন করছি।” রিয়ালে ভিনিসিয়াসের সতীর্থ থিবো কুর্তোয়া জানিয়েছেন, ভিনি মাঠ থেকে উঠে যেতে চাইলে উঠে যেতেন তিনিও।