সম্প্রতি জাতীয় রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছে “দ্য কেরালা স্টোরি”। ভোটমুখী কর্ণাটকে গেরুয়া শিবিরের প্রচারের অস্ত্র হয়ে উঠেছিল ছবিটি। যার বিষয় বস্তু কেরালায় ‘লাভ জিহাদ’ অর্থাৎ হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম তৈরির অভিযোগ। তবে এই আবহেই মেয়ে মণিকার সঙ্গে তাঁর সহপাঠী মনিস আহমেদের বিয়ে দিতে চলেছেন উত্তরাখণ্ডের বিজেপি নেতা এবং আরএসএসের প্যারেড করা কর্মী যশপাল পেনাম। একইসঙ্গে যিনি উত্তরাখণ্ডের পৌরী গারওয়াল নগরপালিকা অর্থাৎ পুরসভার চেয়ারম্যানও। আগামী ২৮ মে তাঁর মেয়ের বিয়ে। পাত্র-পাত্রীর ছবি ও পরিচয় দিয়ে কার্ড ছাপানো হয়েছে। নিমন্ত্রণপত্র বিলিও প্রায় শেষ পর্যায়ের মুখে। স্বাভাবিক ভাবেই নিমন্ত্রণের কার্ডের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং তাঁকে তেড়ে গাল পাড়ছে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা।
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের মতো উত্তরাখণ্ডেও চালু আছে লাভ জিহাদ বিরোধী আইন। ফলে পুলিশ-প্রশাসন যে কোনও সময় এসে পাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। শুধু পুলিশ প্রশাসনই নয়, আছে লাভ জিহাদ বিরোধী ‘লেঠেল বাহিনী’। হিন্দুত্ববাদীদের সেই সব সংগঠন খুঁজে বেড়ায় কোথায় হিন্দু-মুসলিম নারী-পুরুষের মধ্যে প্রেমের বীজ বপন হল। ফলে মণিকা ও মনিসের বিয়ে শান্তিতে সম্পন্ন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছেই। যদিও একপ্রকার দলের বিরুদ্ধাচারণ করে মণিকার বাবা, পুরসভার চেয়ারম্যান যশপালের সাফ কথা, ‘প্রেম-ভালবাসা-বিয়েকে ধর্মের আতস কাচের নীচে দেখার কোনও অর্থ হয় না। দুই তরুণ-তরুণীর নিজেদের ভাল লাগলে ধর্ম সেখানে গৌণ।’ যশপালের এই কথায় তীব্র আপত্তি রাজ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত গৌ সুরক্ষা আয়োগ অর্থাৎ কাউ প্রোটেকশন কর্পোরেশনের সদস্য স্থানীয় বিজেপি নেতা ধরমবীর গোঁসাইয়ের। তাঁর সাফ কথা, আমরা এই বিয়ে মানতে পারছি। এটা উত্তরাখণ্ডীদের ঐতিহ্যের বিরোধী।