এর আগে যখন হিমাচল প্রদেশে যখন বিজেপি হেরেছিল সে সময়ে ভূমিপুত্র তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার ওপরে যাবতীয় দোষ চাপিয়েছিল দল। আর এবার কর্ণাটকে বিজেপির হারকে যখন ‘মোদীর পরাজয়’ বলে সরাসরি চিহ্নিত করতে শুরু করে দিয়েছে বিরোধীরা তখন প্রধানমন্ত্রীকে আড়াল করতে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কর্ণাটকের ভূমিপুত্র বি এল সন্তোষের ঘাড়েই হারেত দায় চাপাচ্ছে বিজেপি।
যদিও কর্ণাটকে বিজেপির পরাজয়কে মোদীর পরাজয় বলার যথেষ্ট কারণ আছে। নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকে প্রচার শেষ হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী বারবার ওই রাজ্যে গেছেন। শেষ সাত দিনে ২১টি জনসভা করেছেন, রোড শো করেছেন চারটি। পোস্টার, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, কাট আউটে স্রেফ তাঁরই মুখ প্রাধান্য পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, শীর্ষ নেতারা পর্যন্ত জনসভায় প্রার্থীদের উপস্থিতি সত্ত্বেও মোদীর নামে ভোট চেয়েছেন। জনতাকে বলেছেন, তাঁরা যেন প্রতিটি ভোট মোদীজিকে দেন। এমন ‘মোদীময়’ প্রচার সত্ত্বেও বিজেপির এভাবে মুখ থুবড়ে পড়াকে স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ‘মোদীর পরাজয়’ বলে বর্ণনা করছেন।
এদিকে, কর্ণাটকে দলের বিপর্যয়ের দায় যে প্রধানমন্ত্রী নয়, তা প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির। প্রধানমন্ত্রীর দিকে যাতে আঙুল না ওঠে সে জন্য হারের জন্য মূলত দায়ী করা হচ্ছে কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইকে। তিনি নিজেও জানিয়েছেন, দলের পরাজয়ের জন্য দায়ী প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া। এই হারের দায় মোদীজির নয়। তিনি তো শুধু কর্ণাটকে ভোটের প্রচারে এসেছিলেন। তিনি গোটা দেশের নেতা। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া আঁচ করেই তো মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বছর দু’য়েক প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়ার কারণে ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে বোম্মাইকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। এখন ভোটের ফলের পরে বিজেপির সাফাই, মুখ্যমন্ত্রী বদলের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কিন্তু বোম্মাই উপযুক্ত প্রার্থী ছিলেন না বলেই এখন মনে করছে দলের একাংশ। তাদের দাবি, মূলত বোম্মাইয়ের প্রশাসন চালানোর প্রশ্নে অনভিজ্ঞতার কারণে দুর্নীতির লাগামছাড়া বাড়বাড়ন্ত হয়। মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস দেখাতে ব্যর্থ হন তিনি। যা জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সম্ভবত মানুষের সেই ক্ষোভের কারণেই চলতি নির্বাচনে বোম্মাই মন্ত্রিসভার ১২ জন মন্ত্রী পরাজিত হয়েছেন।