শনিবার কর্ণাটকে শোচনীয় হারের সঙ্গে সঙ্গে সারা দক্ষিণ ভারত থেকে মুছে গিয়েছে বিজেপির আধিপত্য। তবে দক্ষিণে মুখ পুড়লেও যোগীরাজ্যের পুরভোটে মানরক্ষা হয়েছে গেরুয়াশিবিরের। কিন্তু তার পাশাপাশিই খোদ রামজন্মভূমি অযোধ্যায় অবাক কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক মুসলিম যুবক। পুরনির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছেন তিনি। অযোধ্যার রাম অভিরাম দাস ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সুলতান আনসারি। যেটি মূলত হিন্দুপ্রধান অঞ্চল। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সুলতানের জয়ে হিন্দু-মুসলিম সকলেই খুশি। কর্ণাটকে বিজেপির ভরাডুবির দিনই প্রকাশ্যে এসেছে উত্তরপ্রদেশের পুরভোটের ফলাফল। ৬০টি ওয়ার্ডের অযোধ্যা পুরসভা দখল নিয়েছে গেরুয়াশিবির। ২৭টি ওয়ার্ডে জিতেছে তারা। বিরোধী সমাজবাদী পার্টি জিতেছে ১৭টি ওয়ার্ড এবং নির্দল প্রার্থীরা জিতেছেন ১০টি ওয়ার্ডে। তারই একটি রাম অভিরাম দাস ওয়ার্ড। যেখানে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন সুলতান। “এটা অযোধ্যায় হিন্দু-মুসলিম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের তথা সৌভ্রাতৃত্বের সেরা উদাহরণ হতে পারে”, বক্তব্য তাঁর।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাম অভিরাম দাস ওয়ার্ডে মুসলিম ভোটারের সংখ্যা নগণ্য । মোট ভোটারের মাত্র ১১ শতাংশ। এলাকায় হিন্দু ভোটার ৩,৮৪৪। মুসলিম ভোটার ৪৪০। এর মধ্যে ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন সুলতান। মোট ভোট পেয়েছেন ৯৯৬টি। দ্বিতীয় স্থানে আরও এক নির্দল প্রার্থী নগেন্দ্র মাঝি পেয়েছেন ৪৪২টি ভোট। তৃতীয় স্থানে শেষ করেছেন বিজেপি প্রার্থী। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় মুসলিম প্রার্থীর জয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সুলতান বলেন, “আমি এখানকার বাসিন্দা। যত দূর জানি আমার পূর্বপুরুষ গত ২০০ বছর ধরে এখানকার নাগরিক। ভোটে লড়ার কথা যখন হিন্দু বন্ধুদের জানাই ওঁরা আমাকে সমর্থন করেন এবং সবরকমভাবে উৎসাহ দেন।” সুলতানের জয়ে খুশির হাওয়া এলাকাবাসীদের মধ্যে। “অযোধ্যা গোটা দুনিয়ায় রাম মন্দিরের জন্য পরিচিত, কিন্তু এখানে প্রচুর মসজিদও আছে। সুফি সন্তদের শতাব্দী প্রাচীন সমাধি রয়েছে। আমাদের এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে”, জানিয়েছেন জনৈক স্থানীয় বাসিন্দা।