কথা রাখলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বীরভূম জেলা সফরে দেউচা-পাঁচামি এলাকার মানুষেরা দাবি করেছিলেন যে প্রস্তাবিত কয়লাখনি এলাকায় শুধু পুলিশে নয়, সরকারি বিভাগের চতুর্থ শ্রেণিতেও নিয়োগ করা হোক। তিনি সফর শেষ করে ফেরার পরের দিনই খনি এলাকায় আরও ২৫ জন হাতে পেলেন চতুর্থ শ্রেণি পদে চাকরির নিয়োগপত্র। তা তুলে দিলেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। বিধানবাবু জানান, এর আগে ৬০০ জন জমিদাতার মনোনীত প্রার্থী জুনিয়র কনেস্টেবল পদে ও ৩০০ জন চতুর্থ শ্রেণি পদে নিয়োগপত্র পেয়ে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এছাড়াও বেশ কিছু কর্মীর সরকারি নথি যাচাইয়ের কাজ এখনও হয়নি। তা হয়ে গেলে দ্রুত নিয়োগপত্র দেওয়া হবে তাঁদের। গত বুধবার মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়া গ্রামে রাজেশ ওড়াংয়ের বাড়ি যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলার সময় কয়েকজন দাবি করেন, জমিদাতাদের চতুর্থ শ্রেণিতে কাজের সুযোগ দেওয়া হোক। তিনি বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছিলেন। শুক্রবার জেলা সফর শেষ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। আর তাঁর নির্দেশমতো শনিবারই মহম্মদবাজার এলাকার ২৫ জনকে চতুর্থ শ্রেণি পদে নিয়োগ করা হল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেউচা-পাঁচামির প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকায় জমিদাতাদের মনোনীত প্রার্থীরা হয় জুনিয়র কনস্টেবল, নয়ত সরকারি দফতরে কাজ পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্যাকেজ অনুসারে, যাঁরা অষ্টম শ্রেণি বা সমতুল্য পাশ বা শারীরিকভাবে ততটা সক্ষম নয় বা পুলিশে কাজ করতে ইচ্ছুক নন, তাঁদের সরকারি দফতরে কাজ দেওয়া হবে। সরকারি হিসাবে প্রস্তাবিত কয়লা খনির সাড়ে ১২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল। তার একটা ছোট অংশ ছিল দেওয়ানগঞ্জ হরিনসিঙা। তার প্রায় চারগুণ আয়তনে বেশি দেউচা-পাঁচামি এলাকা। জেলাশাসকের মতে, দ্বিতীয় পর্যায়ে দেউচা-পাঁচামি এলাকা থেকে এদিন ২৫ জনকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হল। এছাড়াও ১ জানুয়ারি, ২০২২ সাল পর্যন্ত মনোনীত প্রার্থী যাদের বয়স ১৮ বছর হয়নি, তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নিয়োগপত্র তৈরির কাজ চলছে। জেলাশাসক জানান, ১০ টি মৌজা জুড়ে কূপ খনন করে মাটির তলা থেকে কয়লা উত্তোলনের সমীক্ষার কাজ শেষ। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করবেন, কবে থেকে কীভাবে এশিয়ার বৃহত্তম কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে। তার সবুজ সংকেত দেবেন মমতাই। ততদিনে জমিদাতাদের পছন্দ অনুযায়ী তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে চাকরির নিয়োগপত্র।