এবার আইনি জটিলতায় পড়লেন বর্তমান সিএবি সভাপতি এবং প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। গত ১৮ এপ্রিল ঠাকুরপুকুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন তাঁর স্ত্রী মোম গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগ, দিনের পর দিন তাঁর ওপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালিয়েছেন স্বামী স্নেহাশিস। ঝগড়া, অশান্তি, মনোমালিন্য তো বটেই, সঙ্গে রীতিমতো ব্যাট বা উইকেট দিয়ে চলত মার। শিকার হয়েছেন যৌন নির্যাতনেরও। তার ওপর বাপের বাড়ি থেকে টাকাপয়সা নিয়ে আসার দাবিও নাকি প্রায়ই রাখতেন স্নেহাশিস।
একটি বাংলা পাক্ষিককে মোম গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আজ এতদিন পরে তিনি মুখ খুললেও বিয়ের তিন চার বছর পর থেকেই বিভিন্ন মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন স্নেহাশিস। আর তাঁর কপালে জুটেছে অত্যাচার। এমনকি তাঁর বাবা-মাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হত বলে অভিযোগ করেছেন মোম। কিন্তু এই সব কিছুকেই ছাপিয়ে যে অভিযোগ মোমের দিক থেকে পাওয়া যাচ্ছে, তা হল এক মহিলার সঙ্গে স্নেহাশিসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সেই ঘনিষ্ঠতা এতটাই, যে তাঁরা প্রায় একসঙ্গে থাকতেও শুরু করেছেন। মোম বলছেন, উনিই নাকি তাঁদের সব কিছু শেষ করে দিয়েছেন।
সেই মহিলার নাম অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় বণিক। বস্তুত, তাঁর বা স্নেহাশিস কারোর তরফেই তাঁদের সম্পর্কের কথা গোপন করা হয়নি। দু’জনেই খোলাখুলিভাবে জানিয়েছেন একে অপরের কথা। অর্পিতা কলকাতার এক বিশিষ্ট শিল্পপতির প্রাক্তন স্ত্রী। তিনি নিজেও সফল ব্যবসায়ী। ছত্তীসগড়ে তাঁর রাসায়নিকের ব্যবসা রয়েছে। অর্পিতা ওই পাক্ষিককে জানিয়েছেন, মোমের অভিযোগ অহেতুক। বরং মোম বারেবারে তাঁকে অপমান করেছেন। তাঁকে ঘিরে যে ‘স্নেহাশিসের ঘর ভাঙানোর’ অভিযোগ করা হচ্ছে, সেও ভিত্তিহীন। স্নেহাশিসের সঙ্গে তিনি কিছু পাওয়ার জন্য সম্পর্কে জড়াননি।
অর্পিতার কথায়, তাঁর প্রাক্তন স্বামীর সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা। এখন তিনি নিজেও সফল ব্যবসায়ী। তাঁর বহু বন্ধুর কর্পোরেট বক্স আছে ইডেনে। ফলে স্নেহাশিসের থেকে তাঁর নতুন করে কিছুই পাওয়ার নেই। সবচেয়ে বড় কথা, ডিভোর্স দেওয়ার জন্য মোমের আর্থিক দাবি যা যা আছে, তিনি সেসবের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল। মোম নাকি দাবি করেছিলেন পাঁচ কোটি টাকা, সঙ্গে ফ্ল্যাট। স্নেহাশিসের তাতে সমস্যা থাকলে সেসব টাকা না হয় তিনিই জোগাবেন। ‘ভগবানের আশীর্বাদে আজ আমার এক-দু’ কোটি টাকায় কিছু এসে যায় না’, বলছেন অর্পিতা।
যাকে নিয়ে এত অভিযোগ, তিনি, অর্থাৎ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা স্নেহাশিসের বক্তব্য, বিষয়টিকে মোম যতটা সরলীকৃত করে বলছেন, ঘটনা আদতেই তা নয়। ২০১৫ সালের পর থেকে মোম তাঁর সঙ্গে থাকেন না, ফলে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আসছে কী করে? মোমকে তিনি অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্কে থাকার কথাও জানিয়েছিলেন। তাতে নাকি মোমের সম্মতিও ছিল। ডিভোর্স দিতে হলে আর্থিক যা যা দাবিদাওয়া আছে মোমের, তার সবই তিনি মিটিয়ে দিতে রাজি। ফলে এসব অভিযোগই তিনি তুলছেন শুধুমাত্র স্নেহাশিসকে হেনস্থা করার জন্য। তাঁর যাবতীয় ইনশিওরেন্সের নমিনি এখনও মোমই আছেন। তিনি যা উত্তর দেওয়ার, আইনি পথেই দেবেন।