প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা শুনে শিউরে উঠছেন অনেকেই। সম্প্রতিই দেশের একটিবিতর্কিত ছবি ‘কেরল স্টোরি’তে দাবি করা হয়েছে, এক দশকের কিছু বেশি সময়ে কেরল থেকে ৩২ হাজার মহিলা নিরুদ্দেশ হয়েছেন। এবার মহারাষ্ট্রের এক ভয়াবহ তথ্য সামনে এল। রাজ্য মহিলা কমিশন জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মহারাষ্ট্রে ঘরছাড়া হয়েছেন ৫, ৬০০ জন মহিলা। অধিকাংশের বয়স ১৮-২৫-এর মধ্যে। এই ঘটনা সিনেমার চিত্রনাট্য নয়। ফলত প্রবল আশঙ্কায় প্রশাসন। সোমবার রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রুপালি চাকানকর গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানান, জানুয়ারি মাসে নিরুদ্দেশ হয়েছেন ১,৬০০ মহিলা, ফেব্রুয়ারিতে ১,৮১০ এবং মার্চে সংখ্যাটা ২,২০০ জন। বাড়ির লোকেদের না জানিয়ে ঘরছাড়া হয়েছেন এই মহিলারা। রুপালি বলেন, “দিনকে দিন এই সংখ্যাটা বাড়ছে। এটা গভীর উদ্বেগের বিষয়।” মহিলা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী মহারাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ঘরছাড়া হন ৭০ জন মহিলা। ২০২০-২৩ সালের মধ্যে মহারাষ্ট্র সেই রাজ্য যেখানে সব থেকে বেশি মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন।
এবিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তরুণীদের নিরুদ্দেশ হওয়ার অন্যতম কারণ পরিবারের অমতে নিজের পছন্দের ছেলের সঙ্গে প্রেম কিংবা বিয়ে। বিশেষত যেখানে সম্পর্কের মাঝখানে জাত-ধর্ম বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেখানে ঘরছাড়ার সংখ্যা বেশি। এছাড়াও বাড়ির কঠোর অনুশাসন এড়াতে, বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর দাদা-বৌদির অত্যাচারে, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর তাগিদে আচমকা একদিন গায়েব হচ্ছেন তরুণীরা। পুলিশ আধিকারিকদের বক্তব্য, এদের অনেকেই নারী পাচারচক্রের ফাঁদে পড়ছেন। যদিও অনেক ক্ষেত্রে কিছু করার থাকছে না। কারণ বয়স ১৮ বছরের কম হলে অপহরণের মামলা সম্ভব, বেশি হলে বড় জোর নিরুদ্দেশের ডায়েরি হয়ে থাকে। পুলিশের দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবারের লোকরা জানেন, ঠিক কোন কারণে ঘরছাড়া হয়েছেন মেয়ে। কিন্তু তাঁরা তা প্রকাশ্যে আনেন না। বেশ কিছু এনজিও এই বিষয়ে কাজ করছে। এই বিষয়ে কাউন্সিলিং করে থাকা তারা। মনোবিদরা বাবা-মায়েদের বোঝান। যা মানলে ভাল ফল পাওয়া যাবে বলেই মনে করছে পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
