কিছুদিন আগেই বাংলার বকেয়া টাকা চাইতে দিল্লীতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের অফিসে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গিরিরাজের আপ্ত সহায়ক বলেছিলেন, গিরিরাজ দিল্লীতেই নেই, পাটনায় গিয়েছেন। পরে অভিষেক বুঝতে পেরেছিলেন, ‘গিরিরাজ দিল্লীতে থাকলেও তাঁদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছিলেন’। আবার তৃণমূলের দেওয়া এ ব্যাপারে একটি চিঠি গিরিরাজ সিং তাঁর দফতরে ফরওয়ার্ড করায়, টিপ্পনি কেটেছিলেন অভিষেক। বলেছিলেন, গিরিরাজ ফরওয়ার্ডিং টু গিরিরাজ! তৃণমূলের অভিযোগ ছিল এও লুকোচুরি।
নবান্নের আমলারা মনে করছেন, মোদি সরকারের লুকোচুরি খেলা এখনও শেষ হয়নি। বরং তাঁদের আশঙ্কা, কেন্দ্রের টিম বাংলায় ঘুরে যাওয়ার পর যে টাকা পাওয়ার আশা তৈরি হয়েছিল, তাও কার্যত জলে যাবে। আবাস যোজনায় অ্যাকশন টেকেন রিপোর্টের ভিত্তিতে গত মার্চ মাসে বাংলায় ঘুরে গেছে গিরিরাজের মন্ত্রকের প্রতিনিধি দল। মোট দশটি টিম এসেছিল। সেই সব দল ফিরে যাওয়ার পর ২ মাস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের পর্যবেক্ষণ জানায়নি নবান্নকে। সাধারণত, এ সব ক্ষেত্রে রাজ্যকে কেন্দ্রের অবজারভেশন পাঠানো হয়। তার ভিত্তিতে রাজ্য পদক্ষেপ করে। তার পর বরাদ্দ অনুমোদন করে কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রের টিম রিপোর্ট না দিলে টাকা পাওয়ার আশা দেখা যাচ্ছে না!
ওই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল ফিরে গিয়ে মন্ত্রকে তাঁদের রিপোর্ট পেশ করেছে কিনা তাও জানা নেই রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের। অর্থাৎ দিল্লী-কলকাতা কোনও কমিউনিকেশনই নেই। বাক্যালাপ কার্যত বন্ধ। ওই ১০টি টিমের প্রতিটিতে এক জন করে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার অফিসার ছিলেন। তাঁরা কোনও পর্যবেক্ষণ না জানানোয় নবান্নের কর্তারাও বুঝতে পারছেন না ভুল কোথায় হয়েছে? নবান্নের হিসাবে ক্ষতি হল আনুমানিক ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের। অর্থাৎ বাংলায় মোট জনসংখ্যা ১০ শতাংশ মানুষকে এর ফলে ভুগতে হবে। বর্ষাতেও মাথায় পাকা ছাদ পাবে না সাড়ে ১১ লক্ষ পরিবার। অর্থাৎ প্রায় ৪৪ লক্ষ মানুষ।