ভারতীয় রেলের মোট ১৪টি প্রিন্টিং প্রেস ছিল। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় কয়েক বছর আগে তার মধ্যে ৯টি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৫টিও এবার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ওই পাঁচটি ঐতিহ্যশালী রেলওয়ে প্রিন্টিং প্রেসের মধ্যে একটি হাওড়ায়। বাকিগুলি রয়েছে মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই ও সেকেন্দ্রবাদে।
২০১৯ সালেই স্থির হয়েছিল এই পাঁচটি প্রিন্টিং প্রেস বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে ২০২২ সালে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়। চলতি সপ্তাহে ফের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই পাঁচটি প্রিন্টিং প্রেস বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে মোট সাড়ে ৮০০ কর্মীর ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে চলেছে। এই প্রিন্টিং প্রেসগুলিতে টিকিট সহ নানাবিধ নথিপত্র ছাপা হতো। ডিজিটাল হওয়ার পর এই সব ব্যবস্থা বেসরকারি হাতে দেওয়া হবে সিকিওরিটি প্রিন্টিং ব্যবস্থার আওতায়। অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদিত সংস্থার কাছে। একইভাবে আগামী দিনে সরকারের অন্য পরিষেবা এবং নথিপত্রকেও ডিজিটাল ব্যবস্থায় নিয়ে যাওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়নের মন্ত্রকের আওতায় থাকা ডিপার্টমেন্ট অব প্রিন্টিংয়ের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কোনও সরকারি সিদ্ধান্ত সংবলিত গেজেট নোটিফিকেশন কাগজে ছাপা নথি হিসেবে প্রকাশ করা হবে না। সম্পূর্ণ ডিজিটাল হবে সার্কুলার, গেজেট নোটিফিকেশন, দপ্তরের অভ্যন্তরীণ অর্ডার, শো কজ নোটিস, সাসপেনশন। যদি মন্ত্রকগুলির নিজস্ব কোনও নথি রিপোর্ট প্রকাশ করতে হয়, তাহলে সামান্য কিছু কপিই ছাপা হবে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই যাবতীয় নথি ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে আরও বেশি করে বেসরকারি ব্যবস্থাকে যুক্ত করা হবে। কারণ সরকার সব কিছু ডিজিটাল করতে চাইলেও উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। তাই অন্তত আগামী বেশ কিছু বছর ধরে আউটসোর্সিং অর্থাৎ বেসরকারি সংস্থাকেই এই দায়িত্ব দেওয়া হবে। এভাবেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভারত সরকারের যত প্রিন্টিং প্রেস রয়েছে, তার সিংহভাগই ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়া হবে।