আরও একবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কটাক্ষের সুর চড়ালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, রাজ্যে শাসক তৃণমূলের হাত শক্ত হলে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার রাজ্যের প্রাপ্য আটকে রাখতে পারবে না। আগামী পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে জেতানোর আহ্বান জানালেন অভিষেক। মুর্শিদাবাদে ‘জনসংযোগ যাত্রা’র সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দলের সাংসদ সংখ্যা ৩৪ থেকে কমে ২২ হয়েছে বলেই বাংলার টাকা আটকে রাখার সুযোগ পাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’ তাঁর যুক্তি, ২০১৪ সালের মতো ২০১৯ সালেও যদি ৩৪টি আসন পেত তৃণমূল, তা হলে মোদী সরকার বাংলার পাওনা আটকে রাখতে পারত না। রাজ্য জুড়ে ‘জনসংযোগ যাত্রা’য় বেরিয়ে অভিষেক এখন মুর্শিদাবাদে রয়েছেন। সোমবার নবগ্রামের ভোলাডাঙা ফুটবল ময়দানে সভা করেন তিনি। সেখানে অভিষেকের বক্তব্য, বাংলার প্রাপ্য কোটি কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। মানুষ আওয়াজ তুললে সেই টাকা কোনও সরকারই আটকে রাখতে পারে না। তাই, নিজেদের স্বার্থেই তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ী করার আহ্বান জানান অভিষেক। ‘‘বাংলা থেকে ১০ লক্ষ মানুষ দিল্লী গেলে কোনও নেতার পক্ষে কানে তুলো গুঁজে বসে থাকা সম্ভব নয়। আমাদের কথা ওদের শুনতেই হবে’’, স্পষ্ট বক্তব্য তাঁর।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবিবারই অভিষেক আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২টির মধ্যে ৪০টি আসনের জন্য ঝাঁপানোর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা বেশি হলে টাকা আটকে রাখতে পারত না দিল্লি। সোমবারও ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘তৃণমূল যখন জিতেছে, বিজেপি চেয়েও বাংলার টাকা আটকাতে পারেনি। ২০১৪ থেকে ২০১৯, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায়। তৃণমূলের ৩৪টা সাংসদ। নরেন্দ্র মোদী পেরেছেন মানুষের টাকা আটকে রাখতে? পারেননি। কারণ, ৩৪ জন সাংসদ ছিল। ২০১৯-এ সাংসদ ৩৪ থেকে কমে হল ২২। সঙ্গে সঙ্গে আপনার টাকা আটকে গেল। তৃণমূল জিতলে মানুষ শক্তিশালী হবে, তৃণমূল হারলে মানুষ দুর্বল হবে। কারণ তৃণমূল মানুষের দল। বাংলার মানুষের অধিকার দিল্লির বুক থেকে ছিটিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের। মানুষকে সংগঠিত করার দায়িত্ব আপনাদের সকলের।’’ বিরোধীদের নিশানা করে অভিষেক বলেন, ‘‘তৃণমূল হাই কোয়ালিটির ডিভিডি। ডিভিডি যখন ভিসিআরে চালাবেন, কানে শুনতেও পাবেন, চোখে দেখতেও পাবেন। বিজেপি আর কংগ্রেস হচ্ছে ভাঙা অডিয়ো ক্যাসেট। টেপে চালালে শুধু কানে শুনতে পাবেন। চোখে দেখতে পাবেন না। চোখে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কানে শুনে নয়। আমাদের সরকার যা বলেছে, তা করেছে।’’ সেই সূত্রে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিরও ‘ব্যাখ্যা’ দেন অভিষেক। ‘‘সর্ব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া উন্নয়নকে সামনে রেখে এগিয়ে চলাই হল নবজোয়ার। হেরে গিয়ে মানুষকে শাস্তি নয়, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে স্বস্তি। তার নামই তৃণমূলে নবজোয়ার। মানুষের প্রতিনিধিকে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার নামই তৃণমূলে নবজোয়ার’’, জনসাধারণের উদ্দেশে জানিয়েছেন তিনি।
