সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন বাংলায়। আর বছর ঘুরলেই দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচন। ভোট-আবহে ইতিমধ্যেই সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। আর ভোট যতই এগিয়ে আসছে, ততই মাথাব্যথা বাড়ছে বঙ্গ বিজেপির। গোষ্ঠীকোন্দলে ইতিমধ্যেই জর্জরিত দল। এবার ফের প্রকাশ্যে এল সাংগঠনিক দুর্বলতা। সূত্রের খবর, বঙ্গ বিজেপির জন্য ৪২টি বোলেরো এসে গিয়েছে। ৩০০টি বাইকও কিনছে রাজ্য বিজেপি। খরচ পড়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা। ৪২টি লোকসভা আসনে, প্রতিটির জন্য একটি করে বোলেরো দেওয়া হবে। ২৯৪টি বিধানসভা আসনের জন্য কেনা হয়েছে ৩০০ বাইক। কিন্তু গাড়িতে চড়ার লোক আদৌ পাওয়া যাবে? খোদ পদ্মশিবিরের অন্দরে উঠে গেল এমন প্রশ্ন। গাড়ি কেনা নিয়ে রাজ্য নেতাদের কটাক্ষ করেছে ‘বিজেপি বাঁচাও’ মঞ্চ।
এপ্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপির একাংশের নেতারা বলছেন, পঞ্চায়েতের ৬০ হাজার আসনের অধিকাংশেই প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না! সেখানে এত গাড়ি যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছে না অনেকেই। রাজ্যের গেরুয়াশিবিরের একাংশের মতে, বুথ কমিটির লোক নেই। জেলায় সংগঠন চালানোর খরচের বিল জমা দিয়েও মিলছে না অর্থ, দলের নিচুতলায় পতাকা ধরার লোক নেই। কিন্তু লোকসভাকে পাখির চোখ করে কোটি-কোটি টাকার গাড়ি আসছে বঙ্গ বিজেপি দপ্তরে। জানা গিয়েছে, ৪২টি গাড়ির এক একটির দাম প্রায় ৯ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। বাইকগুলির এক একটির দাম ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো। সব মিলিয়ে গাড়ি কিনতে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি টাকা।
দলের আদি নেতাদের মতে, বিজেপি এখন কর্পোরেট ধাঁচে চলছে। রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠক, চিন্তামন্থন শিবির হচ্ছে বিলাসবহুল হোটেল, রিসর্টে। কিন্তু ভোট বাক্সে ফল মিলবে কি? এর উত্তরে সংশয়ের সুরে তারা বলছেন, ২০১৯শে লোকসভা ভোটের সময় পার্টি কর্পোরেট ছিল না। ১৮টি আসন এসেছিল। এখন কী হবে, তা নিশ্চিত নয়। উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে ২৯৪টি বাইক এসেছিল বঙ্গ বিজেপিতে। পরবর্তীতে ৩০টি বাইকের হদিশ মিলেছিল, বাকি ২৬৪টি বাইকের কোনও খোঁজ মেলেনি। এখানেই বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবিরের দাবি, কোটি কোটি টাকা দিয়ে গাড়ি কেনা হচ্ছে, কিন্তু দলের বহু কর্মী অর্থাভাবে রয়েছেন। নেতারা বলছেন, বিজেপির রাজ্য দপ্তরে নতুন করে কোনও কর্মী না নিয়োগ করে, সবাইকে সল্টলেকের নয়া অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য দফতরে নাকি চা, জল দেওয়ারও লোক নেই! পুরনো নেতারা রাজ্য দফতরে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। অফিসে সম্পাদকের দেখাও মিলছে না সবসময়। কাজেই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে ভোটবাক্সে আদৌ ফল মিলবে কিনা, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্নচিহ্ন।