ঘনিয়ে আসছে দুর্যোগ। আগামী ৬ই মে, শনিবার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হবে ঘূর্ণাবর্তের। ৭ই মে এই ঘূর্ণাবর্ত আরেকটু শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপের রূপ নেবে। ৮ই মে এই নিম্নচাপ আরও জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। ৯ই মে এটি ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেবে। ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে এর নাম হবে মোকা বা মোখা। এই নাম ইয়েমেনের দেওয়া। সমুদ্রপৃষ্ঠে এটি কতক্ষণ একই জায়গায় থেকে আরও কতটা শক্তি বাড়াল, এবং সেইসময় হাওয়ার গতিমুখ কোন দিকে রয়েছে, তার উপর নির্ভর করবে এর সম্ভাব্য ল্যান্ডফলের স্থান ও গতিবেগ কত হতে পারে সেই ফ্যাক্টর গুলি। নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। ৯ই মে এটির ফর্মেশনের পর ঘন ঘন এই বিষয়ে আপডেট দিতে থাকবে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত উপগ্রহ চিত্র অনুযায়ী মোকা ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ বাংলাদেশ ও মায়ানমারের উপকূল বরাবর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ১৩ থেকে ১৭ই মে-র মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনার রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা সরকার ইতিমধ্যেই আগাম সতর্কতামুলক প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। তবে এই দুই রাজ্যে মোকা ঠিক কতটা প্রভাব ফেলবে সে সম্পর্কে এখনও নির্দিষ্ট করে কিছু জানায় নি আবহাওয়া দফতর।
প্রসঙ্গত, আজ রাজ্য জুড়ে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে শিলাবৃষ্টির সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের দুই এক জেলায় কালবৈশাখীর পরিস্থিতি হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। কাল, ৫ই মে শুক্রবার থেকে রাজ্যে বৃষ্টির পরিমাণ, সম্ভাবনা দুইই কমতে শুরু করবে। শনিবার ৬ই মে থেকে গোটা রাজ্যে বাড়বে তাপমাত্রা। সোমবার থেকে বাড়বে তাপমাত্রা। পশ্চিমাঞ্চলের জেলায় ফের ৪০ এর ঘরে উঠতে চলেছে পারদ। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে বিক্ষিপ্তভাবে। শুক্রবার থেকে পার্বত্য এলাকা ছাড়া বাকি উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা কমবে। কলকাতায় আজ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থাকবে। বিকেল বা সন্ধের দিকে ঝড়বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে। সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬.১ ডিগ্রি। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৫৭ থেকে ৯০ শতাংশ। বুধবার আলিপুর এলাকায় ২.৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকবে শুক্রবার। কর্ণাটক এবং ছত্রিশগড়ে দুটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। একটি অক্ষরেখা রয়েছে মধ্যপ্রদেশ থেকে তামিলনাড়ু পর্যন্ত। আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টি হবে অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মেঘালয় এবং অন্ধ্রপ্রদেশে। পাশাপাশি, আগামী ৪৮ ঘন্টায় উত্তরাখণ্ডে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকবে। শিলাবৃষ্টির সঙ্গে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আগামী কয়েক দিন পঞ্জাব, হরিয়ানা, চন্ডিগড়, দিল্লী সহ উত্তর-পশ্চিম ভারতের সমতলের রাজ্যগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহবিদরা।
