চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না। তাই সেরিব্রাল স্ট্রোকে আক্রান্ত প্রৌঢ় যে ক্রমশই ব্রেন ডেথের দিকে এগোচ্ছেন, তা আগেই বুঝে গিয়েছিলেন স্ত্রী ও মেয়ে। তাই তাঁর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেন দুজনে। এবং রিজিওন্যাল অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্ল্যান্ট অর্গানাইজেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে, কার্ডিয়াক সাপোর্ট অ্যাম্বুল্যান্সে প্রৌঢ়কে নিয়ে আসা হয় পিজিতে। অবশেষে বুধবার ছাপ্পান্ন বছরের ওই প্রৌঢ়ের কিডনি ও যকৃতে নতুন জীবন পেলেন তিন জন।
মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, ২২ এপ্রিল রাতে সেরিব্রাল স্ট্রোকে আক্রান্ত হন পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা শম্ভুপ্রসাদ বেরা। রাতেই তাঁকে স্থানীয় মাল্টিসুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। কিন্তু তেমন চিকিৎসা পরিষেবা না থাকায় পরের দিন তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে তিনি চিকিৎসায় সাড়া না দেওয়ায় এরপরে ফের শম্ভুপ্রসাদ বেরাকে চণ্ডীপুরে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
২৪ এপ্রিল সকালেই সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, প্রৌঢ়র শারীরিক অবস্থা ক্রমশ ব্রেন ডেথের দিকে যাচ্ছে। তাঁর মেয়ে জানান, ‘আমরা ঠিক করি ব্রেন ডেথ হলে, বাবার অঙ্গে অন্য কেউ অন্তত উপকৃত হোক। বাবাও মরণোত্তর অঙ্গদান, দেহদানে উৎসাহী ছিলেন।’ তবে চণ্ডীপুরের ওই হাসপাতালের ব্রেন ডেথ ঘোষণা করার অনুমতি নেই। কারণ যে সমস্ত হাসপাতালের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের লাইসেন্স নেই তাঁরা ব্রেন ডেথ ঘোষণা করতে পারেন না।
অগত্যা রোটো-তে যোগাযোগ করেন প্রৌঢ়ের পরিজনেরা। এবং ২৪ এপ্রিল দুপুরের মধ্যেই তাঁকে নিয়ে চলে আসেন পিজির ট্রমা কেয়ারে। সেখানে ভর্তি করা হয় প্রৌঢ়কে। পরের দিন তাঁর ব্রেন ডেথ নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা। অঙ্গদানে সম্মতি দেন মেয়ে ও তাঁর স্ত্রী। এরপরে রোটোর মাধ্যমে কিডনি ও যকৃতের গ্রহীতার খোঁজ মেলে। বুধবার সকালে আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু’জন প্রৌঢ়ের দুটি কিডনি পেয়েছেন। এবং যকৃৎ পেয়েছেন দিল্লীর ‘আইএলবিএস’ হাসপাতালের এক রোগী। এ দিনই তিনজনের প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।