দলের ‘নবজোয়ার যাত্রা’ কর্মসূচিতে অভিষেক বৃহস্পতিবার গিয়েছেন আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রামে। সেখানকারই বারোবিসা অঞ্চলে দলীয় সভা থেকে অভিষেক দাবি করেন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ধর্মীয় প্রচারের কারণে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার জেলার মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আবার পৃথক রাজ্যের প্রতিশ্রুতিতে মানুষ পদ্মে আস্থা রেখেছিলেন। একই সঙ্গে অভিষেক তাঁর সভায় উপস্থিত জনতাকে জানান, ‘পুরনো ভুল’ থেকে শিক্ষা নিয়ে শুধু উন্নয়নের মাপকাঠিতেই ভোট দেওয়া উচিত মানুষের।
অভিষেকের কথায়, ‘২০১৯ সালে এই লোকসভায় (আলিপুরদুয়ার) বিজেপি জিতেছিল। কারণ, আপনারা ধর্মের কারণে ভোট দিয়েছিলেন’। তার পরেই পরামর্শ দেওয়ার ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ‘ধর্ম আমি বাড়়িতে করব। কিন্তু আমি ভোট দেব কাজের ভিত্তিতে’।
কাজের ভিত্তিতে ভোট হলে যে তৃণমূলই জয়ী হবে, সে দাবিও স্পষ্ট করে দেন তিনি। নিজেকে ‘স্পষ্ট কথা বলার লোক’ হিসাবে পরিচয় দিয়ে অভিষেক গত বিধানসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে বিজেপির সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করেন। ঘটনাচক্রে, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল রাজ্য জুড়ে বিপুল সাফল্য পেলেও আলিপুরদুয়ার খালি হাতেই ফিরিয়েছিল ঘাসফুল শিবিরকে। সে কথা উল্লেখ করেই অভিষেক বলেন, ‘২০২১-এ জেলার পাঁচটি বিধানসভাতেই বিজেপি জিতেছিল। কারণ, আপনারা প়ৃথক রাজ্যের দাবিতে ভোট দিয়েছিলেন। লক্ষ্মীর ভান্ডারকে সামনে রেখে ভোট দেননি’। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, ‘ওরা পৃথক রাজ্যের প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি। কিন্তু লক্ষ্মীর ভান্ডার এখনও চলছে। চলবেও’।
উত্তরবঙ্গে পৃথক রাজ্যের মতো ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় নিয়ে অভিষেক যে ভাবে প্রকাশ্য সভা থেকে সরব হয়েছেন, তা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। পৃথক রাজ্যের প্রতিশ্রুতির ‘অসারতা’ প্রমাণে অভিষেক জানিয়েছেন, যদি নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ জেলায় এসে আলাদা রাজ্যের কথা বলে যেতে পারেন, তবে তিনি আর কোনও দিন আলিপুরদুয়ার জেলায় ঢুকবেন না। বিজেপি কেবল ধর্মের নামে বিভাজন, অস্ত্রের ঝঙ্কার প্রদর্শন করতে চায় বলেও রাজ্যের বিরোধী দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অভিষেক।