পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই এবার নজরে উত্তরবঙ্গ। রাজ্যের ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যে জেলায় তৃণমূলের ফল সবচেয়ে খারাপ হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল আলিপুরদুয়ার জেলা। এই জেলার ৫ বিধানসভা আসনেই পর্যুদস্ত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের একাধিক আসন হাতছাড়া হয়েছে। তাই আলিপুরদুয়ার জেলা নিয়ে বৈঠকে বুথ স্তরীয় সংগঠনে জোর দিতে বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
আলিপুরদুয়ার জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রকাশ বরাইক জানিয়েছেন, এখন থেকেই বুথ স্তরে প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছতে হবে সকলকে। দায়িত্ব ভাগ করে এটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করাই মূল লক্ষ্য। তাই এখন থেকেই রাস্তায় নামতে বলা হয়েছে ৷ ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতের গরিষ্ঠ অংশ, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে থাকলেও ২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচন থেকে এই অঞ্চলে ধস নামতে শুরু করে।
২০২১-এর বিধানসভা ভোটে যার রেশ থেকে গিয়েছিল। চা-বাগান, আন্তর্জাতিক সীমানা, আদিবাসী-রাজবংশী ভোট ও রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ পর্যটনক্ষেত্র। একাধিক সুযোগ সুবিধা থাকলেও এই জেলার খারাপ ফল অবশ্যই চিন্তায় রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে ৷ তাই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই এই জেলার সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল অনুযায়ী এই জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৬৬টি। যার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ছিল ৪৩টি। বিজেপি-র দখলে ছিল ৯টি আসন। বাম ও কংগ্রেস ১টি করে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে ৷ অন্যান্যরা জয়ী হয় ১২টি আসনে।পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যা ছিল ৬টি। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৫টি। বিজেপি পেয়েছিল ১টি। বাম-কংগ্রেস-সহ বাকিরা একটিও আসন পায়নি ৷
জেলা পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ১৮টি। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ১৭টি আসন। বিজেপি পেয়েছিল ১টি আসন ৷ এই জেলার বেশিরভাগ অংশের ভোটই চা-বলয়ের ভোট। যদিও তৃণমূলের সেই ভোটব্যাঙ্কে ধস নামে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে। যার ফলে বিজেপি প্রার্থী জন বারলা প্রায় ৫৫.২ শতাংশ ভোট পান ৷ আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দশরথ তিরকে ভোট পান মাত্র ৩৭.৩ শতাংশ ভোট। ২০২১-এ এই জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক ফলের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে এই জেলার ৫ বিধানসভা আসনের প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী বিজেপি পেয়েছে প্রায় ৫০.৪ শতাংশ আর তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ৪০.৪ শতাংশ ভোট। ফলে জেলার ৫ বিধানসভা আসনই হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। ফালাকাটা বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী দীপক বর্মণ পেয়েছিলেন ৪৬.১৭ শতাংশ ভোট। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুভাষ চন্দ্র রায় পান মাত্র ৪৪.৯ শতাংশ ভোট।