সম্প্রতি আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, কারচুপি করে ধনী হয়েছেন আদানিরা। শেয়ার বাজারে তাঁদের যে অবস্থান, তার অনেকটাই কৃত্রিম। আর তারপর থেকেই শনির দশা চলছে গৌতম আদানি এবং তাঁর সংস্থার। মাস তিনেক আগেও তিনি শুধু ভারত নয়, সমগ্র বিশ্বের ধনীতমদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিলেন। ঝড়ের গতিতে এগোচ্ছিলেন প্রথম স্থানটির দিকে। কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের পর লবিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এই ভারতীয় ধনকুবের। বিশ্বের ধনীতমদের তালিকায় এখন আর আদানিকে খুঁজেই পাওয়া যায় না। ২৫ নম্বরে নেমে গিয়েছেন তিনি।
চলতি অর্থবর্ষের পরিসংখ্যানের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন আদানি। তাঁর গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার ঘাড়ে চেপেছে পাহাড়প্রমাণ ঋণের বোঝা। আদানিদের ঋণের পরিমাণ এই মুহূর্তে প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে আদানিদের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গৌতমের সম্পত্তি কয়েক মাসের ব্যবধানে ৫০ শতাংশ কমে গিয়ে প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কগুলিতে আদানি গোষ্ঠীর ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে শুধুমাত্র দেশীয় ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকেই ধার নিতেন তাঁরা। বিদেশে ঋণের বোঝা বাড়ানোর প্রয়োজন পড়েনি।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিদেশে একাধিক আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কে আদানির ঋণ প্রায় এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্চ পর্যন্ত তাঁদের মোট ঋণের ২৯ শতাংশই বিদেশের মাটিতে। গত সাত বছরেও আদানি গোষ্ঠীকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। অন্যদিকে, দেশীয় ব্যাঙ্কে আদানি গোষ্ঠীর ঋণের পরিমাণ এই মুহূর্তে প্রায় ৩২ শতাংশ। আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কে ঋণ ২০১৬ সালের তুলনায় বেড়ে গিয়েছে আরও ১৪ শতাংশ। আবার, গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে আদানিদের মোট ঋণ জমেছে ২৭ হাজার কোটি টাকা।