প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা ঘিরে চরমে পৌঁছেছে বিতর্ক। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট যন্ত্রের সুরক্ষা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তুলে আসছে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। জনমতকে নিজেদের পক্ষে রাখার জন্য এই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটে কারসাজি করছে শাসকদল বিজেপি, এমনই অভিযোগ তাদের। এবার সেই অভিযোগই কার্যত সত্যি বলে প্রমাণিত হল। কারণ, ৩৭ শতাংশ ভিভিপ্যাটেই গোলযোগ ধরা পড়েছে। সাড়ে ৬ লক্ষ ভিভিপ্যাট সারাতে পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের হিসেব বলছে, মোট ব্যবহৃত যন্ত্রের ৩৭ শতাংশই বিকল। আর ভোটদানের কাগজ পরীক্ষার এই সব যন্ত্র ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলত ফলাফলের স্বচ্ছতা ঘিরে ঘনীভূত হয়েছে সংশয়। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দি ওয়্যার’ সম্প্রতি তাদের একটি প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, ২০২২-এর অক্টোবরেই কমিশন বিকল যন্ত্রগুলি সংশ্লিষ্ট নির্মাতা সংস্থায় ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারপরও প্রায় পাঁচ মাস গুদামে পড়ে রয়েছে এই বিপুল সংখ্যক বিকল ভিভিপ্যাট যন্ত্র।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রস্তুতি শুরু করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ভোটদানের যন্ত্র ইভিএম এবং ভোটদানের কাগজ পরীক্ষার যন্ত্র ভিভিপ্যাট পরীক্ষা এবং সারানোর ব্যবস্থা নেওয়া কমিশনেরই কাজ। বিকল যন্ত্র প্রথম ব্যবহার হয় ২০১৮’র বিভিন্ন বিধানসভা ভোটে। ২০১৯-এ যে যন্ত্রগুলি ব্যবহার হয়েছে তার মধ্যেও রয়েছে বিকল প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ যন্ত্র। লোকসভা নির্বাচনে মোট ১৭ লক্ষ ৪০ হাজার ভিভিপ্যাট ব্যবহার হয়েছে বলে জানাচ্ছে কমিশন সূত্র। ‘দি ওয়্যার’-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে হায়দ্রাবাদে ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া এবং ব্যাঙ্গালোরের ভারত ইলেকট্রিনক্স লিমিটেডে পাঠানো হচ্ছে বিকল যন্ত্রগুলি। এতদিন ধরে কমিশনের বিভিন্ন গুদামে যন্ত্র পড়ে থাকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যন্ত্র ঠিক আছে কিনা প্রথম পরীক্ষা করার নিয়ম জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের। বিকল চিহ্নিত হলে রাজ্যে কমিশনের সিইও’র অনুমতি নিয়ে তা সাতদিনের মধ্যে ঠিক করতে পাঠাতে হয়। ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট, দুই ক্ষেত্রেই, নিয়ম অনুযায়ী বিরোধী দলগুলিকে জানিয়ে সারানো বা অন্য কোনও কারণে যন্ত্রের হাতবদল হওয়ার কথা। কিন্তু এক্ষেত্রে বিরোধী দলগুলিকে বিষয়টি আগাম জানানো হয়েছে কিনা, তা পরিষ্কার নয় একেবারেই। যার জেরে স্বাভাবিকভাবেই দানা বেঁধেছে শোরগোল।