ফের বিরোধীদের কড়া ভাষায় একহাত নিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয় দল ছিল, আছে, থাকবে। সম্প্রতি বাংলার শাসকদল জাতীয় দলের তকমা হারানোর পরে বিরোধীদের কটাক্ষের জবাব এই ভাবেই দিলেন মমতা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ অনেকেই ‘এআইটিসি’ (অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস) এখন ‘এবিটিসি’ (অল বেঙ্গল তৃণমূল কংগ্রেস) হয়ে গিয়েছে বলে আক্রমণ শানান। এ নিয়ে দলের অনেক নেতাই জবাব দিয়েছেন। কিন্তু এই প্রথম বার মুখ খুললেন মমতা। বুধবার নবান্নে হওয়া সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন তৃণমূলের সঙ্গে ‘সর্বভারতীয়’ শব্দটি যেমন রয়েছে, তেমনই থাকবে। ‘‘আমরা কারও দয়ায় সর্বভারতীয় দল হইনি। আমরা সর্বভারতীয় দল ছিলাম, আর থাকব। দলের নাম সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ছিল, থাকবে’’, জানান তৃণমূল নেত্রী।
এর পাশাপাশি, জাতীয় দলের তকমা চলে যাওয়া প্রসঙ্গে কিছু প্রশ্নও তুলেছেন মমতা। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন আপনার হাতে মানে আপনি কি যা খুশি করতে পারেন? নিয়ম কী বলে? ১০ বছর পর রিভিউ হয়। শেষ বার ২০১৬ সালে রিভিউ হয়েছিল। সেই হিসাবে আমাদের ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় পাওয়ার কথা। অন্তত ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময় পাওয়া উচিত ছিল।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালেই দশ বছরের জন্য জাতীয় দলের তকমা পেয়েছিল তৃণমূল। তবে এ বার তকমা চলে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন জানায়, তৃণমূলের জাতীয় দলের তকমা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয় ২০১৪ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে। মমতা বুধবার বলেন, ‘‘বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে যা ইচ্ছা করাক। আমরা মানুষের কাছে গিয়ে ইনসাফ চাইব।’’ তৃণমূলের জাতীয় তকমা না-থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা। বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসের ক’জন সাংসদ রয়েছে, ক’জন বিধায়ক রয়েছে দেখুন। এত সাংসদ, বিধায়ক দেশে ক’টা রাজনৈতিক দলের রয়েছে?’’ এখানেই থেকে থাকেননি তিনি। ‘‘বি আর অম্বেডকর যখন সংবিধান রচনা করেছিলেন তখন আঞ্চলিক দলের ধারণা ছিল না। কিন্তু পরবর্তী কালে পরিস্থিতি বদলেছে। মানুষের আকাঙ্ক্ষা, আগ্রহকে মর্যাদা দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি হয়েছে। কিন্তু বিজেপি এ সব বোঝে না। কারণ, সংবিধান রচনায় তাদের কোনও ভূমিকা ছিল না। ওদের যা মর্জি হচ্ছে, ওরা তাই করতে চাইছে’’, মোদী সরকারকে একহাত নিয়ে বক্তব্য তৃণমূল সুপ্রিমোর।