পুলওয়ামা-ইস্যুতে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে মোদী সরকার। প্রসঙ্গত গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তরুণ ভোটারদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘প্রথম বারের ভোটারদের বলছি, আপনাদের প্রথম ভোট পুলওয়ামায় যে সব বীর শহীদ হয়েছেন, তাঁদের নামে সমর্পিত হতে পারে কি!’’ সেই প্রচারের দৃশ্য তুলে ধরলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। মন্তব্য করলেন, ‘‘বোধহয় এই কারণেই আমাকে চুপ থাকতে বলা হয়েছিল!’’ মোদী-জমানায় জম্মু-কাশ্মীর-সহ চারটি রাজ্যের রাজ্যপালের পদে থাকা বিজেপি নেতা সত্যপাল মালিক সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ তুলেছেন, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে পুলওয়ামায় সিআরপি-র কনভয়ে জঙ্গি হানায় ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যুর পরে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। কারণ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গাফিলতি, নিরাপত্তায় ফাঁক থাকার ফলেই কনভয়ে হামলা হয়েছে। কিন্তু সত্যপালের দাবি, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন, এটা অন্য বিষয়। সত্যপাল যেন মুখ বন্ধ রাখেন। ওই সাক্ষাৎকারেই সত্যপাল আভাস দিয়েছিলেন, পুলওয়ামায় জওয়ানদের মৃত্যুকে রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগানো হয়ে থাকতে পারে। এ বার খোদ প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে তুলে ধরে সে দিকে আরও সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করেছেন সত্যপাল। যার জেরে ফের তোলপাড় হয়েছে রাজনৈতিক মহল।
ইতিমধ্যেই সেই প্রসঙ্গ টেনে মোদীকে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। তিনি বলেছেন, ‘‘সত্যপাল স্বঘোষিত সত্যের পালনকর্তার আসল সত্য দেশের সামনে তুলে ধরেছেন।’’ সত্যপালের দাবি ছিল, সিআরপি বিমান জম্মু থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত জওয়ানদের নিয়ে যেতে চাইলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তার বন্দোবস্ত করেনি। প্রাক্তন সেনাপ্রধান, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরীও জওয়ানদের মৃত্যুর জন্য সরকারকে দায়ী করে বলেছেন, পুলওয়ামার ঘটনার দায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারের। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকেও এর দায় নিতে হবে। প্রাক্তন সেনাপ্রধানের এই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করেছে কংগ্রেস। কী ভাবে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা হল, কোথায় গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল, কেন জওয়ানদের নিয়ে যেতে বিমানের বন্দোবস্ত করা হয়নি, প্রধানমন্ত্রীর দফতর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভূমিকা কী ছিল, তা জানিয়ে মোদী সরকারের কাছে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তুলেছেন প্রাক্তন সেনাকর্তা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল রোহিত চৌধুরী ও বায়ুসেনার প্রাক্তন অফিসার অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার অনুমা আচারিয়া।
