শেষমেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি মানতে বাধ্য হল মোদী সরকার। গঙ্গা-পদ্মার ভাঙন রুখতে ২০২২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই কাজে কেন্দ্রের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহারের সমান সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং ২০২২ সালের শেষের দিকে এই কাজের দায় পুরোপুরি রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। কিন্তু এবার সেই অবস্থান থেকে সরে আসল কেন্দ্র। আর বাংলার ভাঙন সমস্যার সমাধান খুঁজতে ৬ই এপ্রিল বৈঠক ডাকা হয় নয়াদিল্লীর সেবা ভবনে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জলশক্তি মন্ত্রক, সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন, সেন্ট্রাল ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ স্টেশন, বাংলা এবং বিহারের সেচ দফতরের আধিকারিকরা।
সূত্র জানিয়েছে, এদিনের বৈঠকে বেশ কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে, গঙ্গা-পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে একযোগে কাজ করবে বাংলা, বিহার, ঝাড়খণ্ড। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলা এবং বিহার গঙ্গা-পদ্মা ভাঙন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নিজেদের মধ্যে আদানপ্রদান শেষ করবে। যার ভিত্তিতে হবে প্রকল্পের ডিপিআর তৈরির কাজ। মালদা, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা-পদ্মার দু’পারে ৩৭টি জায়গায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ শুরু করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন সেচ দফতরের পদস্থ কর্তারা। এখানে ভাঙন ঠেকাতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে খরচও করেছে রাজ্য সরকার। তবে সম্পূর্ণ কাজ রাজ্যের একার পক্ষে করা অসম্ভব বলেই চিঠি লিখেছিলেন মমতা। অবশেষে বৈঠকের পর অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ় প্রতিবাদের জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে একাধিক ইস্যুতে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদে কলকাতায় ধরনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই ভাঙন-ইস্যুতে কেন্দ্রের পদক্ষেপ তাঁর অনড় আন্দোলনের ফলাফল বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।
