আবারও রাজ্যের নজরে নয়াচর। বাম আমলে এই দ্বীপে পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির তোয়াক্কা না করে কেমিকেল হাব গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। যদিও সেই পরিকল্পনা বেশি দূর এগোয়নি। পরিবর্তনের পরে রাজ্য সরকার ওই জমি ফেরতও নিয়ে নেয় বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে। এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে ওই জমিতে নয়া প্রকল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা শুরু করেছেন। এমন প্রকল্প তিনি সেখানে গড়ে তুলতে চান যা ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। চলতি মাসেই নয়াচরের জমি লিজে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে চিরাচরিত মাছ চাষের মাধ্যমেই প্রায় ১০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির ‘টার্গেট’ নিয়েছে রাজ্য।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী দু’বছরের মধ্যে নয়াচর থেকে বিদেশে মাছ রফতানি শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। নয়াচরে প্রায় ৮ হাজার একর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে ৭ হাজার ৬০০টি ছোট ও বড় জলাশয়। রাজ্যের পরিকল্পনা অনুযায়ী, অনেকগুলি জলাশয় নিয়ে তৈরি হবে ইউনিট। এক-একটি ইউনিটে থাকবে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ একর এলাকা। এই ইউনিটগুলি লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। বর্তমানে এলাকার প্রায় ৩ হাজার ৫০০ মৎস্যচাষী এই জলাশয়গুলিতে অসংগঠিত মাছ চাষ করেন। সম্প্রতি তাঁদের কাজের মানোন্নয়ন এবং আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় ৮০টি সমবায় বা কো-অপারেটিভ গঠন করেছে রাজ্য সরকার। এই সমবায়গুলিকে সামনে রেখেই জমি লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। তবে, ব্যক্তিগতভাবেও জমি লিজে নেওয়ার আবেদন করা যাবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
পাশাপাশি, নয়াচরে অ্যাকুয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কাজ নয়াচরের কোন এলাকায় হবে, তা ঠিক করতে দ্রুত একটি প্রতিনিধিদল পাঠাছে নবান্ন। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বিশেষজ্ঞদেরও। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব চৌধুরী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে আগামী দু’বছরে নয়াচর একটি নতুন মাত্রা পাবে। বদলে যাবে এলাকার অর্থনীতি। যদিও রাজ্যের দাবি এই সব কিছু করা হবে পরিবেশের কোনওরকম ক্ষতিসাধন না ঘটিয়ে।